নিম্নতম মজুরি বোর্ড কর্তৃক প্রস্তাবিত ন্যূনতম মজুরি প্রত্যাখান করে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের নির্বিচারে হামলা ও গুলি করে নারী শ্রমিক আঞ্জুয়ারা খাতুন (৩০) কে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।
আজ এক যৌথ বিবৃতিতে ফেডারেশনের সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, অবিলম্বে নারী শ্রমিককে হত্যাকারীকে চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
নেতৃদ্বয় বলেন, পুলিশ বিনা উস্কানিতে শ্রমিকদের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়েছে। শ্রমিকরা ন্যায্য দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। শ্রমিকদের দাবি পূরণ না করে মালিকরা পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে আন্দোলন বন্ধ করার অপ্রয়াস চালিয়েছে। অতীতেও মালিকরা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি বারংবার অস্বীকার করে নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য পুলিশের ওপর ভর করেছিল। আজকেও একই পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে।
এই হত্যার দায় পুলিশের পাশাপাশি মালিকদের বহন করতে হবে। পুলিশ কার নির্দেশে গুলি চালিয়েছে তার সুষ্ঠু তদন্ত করে নির্দেশ দাতার শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। মালিক ও রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিহতের পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। যে সব শ্রমিকরা পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে তাদের চিকিৎসার ব্যয়ভার রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে। শ্রমিকদের ন্যায্য দাবির আন্দোলন পুলিশ দিয়ে ঠেকানোর সংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে।
আমরা বারংবার বলে আসছি, শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি পূরণ না হলে সারাদেশে গণবিস্ফোরণ ঘটবে। ন্যায্য দাবি পূরণের জন্য শ্রমিকরা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলতে প্রস্তুত। শ্রমিকরা কারো রক্তচক্ষুকে ভয় করে না। বছরের পর বছর শ্রমিকরা শুধু মুখ বন্ধ করে সকল শোষণ-নির্যাতন সহ্য করে যাবে, এই ভাবনায় যারা করছেন তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। যে আন্দোলনে শ্রমিকদের রক্ত ঝড়েছে সেই আন্দোলন সফল করে শ্রমিকরা ঘরে ফিরে যাবে।
আমরা স্পষ্ট করে বলছি, শ্রমিকদের সকল ন্যায্য দাবি সময় থাকতে মেনে নিন। শ্রমিকদের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করুন। শ্রমিকদের নাগরিক ও মৌলিক অধিকার কেড়ে নিবেন না। তাদের সাথে বসুন। তারা মালিকদের থেকে থেকে এক পয়সা বেশি মজুরি দাবি করে না। মনে রাখবেন, অতীতে শ্রমিকদের মনে অসন্তোষ সৃষ্টি করে কেউ ক্ষমতার মসনদ ধরে রাখতে পারেনি। এটি ভুলে যাবেন না। দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মেহনতি মানুষের মনের ভাষা বোঝার চেষ্টা করুন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা ঘোষণা করুন।