ন্যূনতম মজুরি ও বেতন-ভাতা বৃদ্ধির দাবিতে আন্দোলনরত পোশাক শ্রমিকদের বিভিন্নস্থানে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন।
আজ এক যৌথ বিবৃতিতে ফেডারেশনের সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান বলেন, গাজীপুরসহ দেশের বিভিন্নস্থানে তৈরি পোশাক শ্রমিকরা আজকে ৮ম দিনের মত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এই আন্দোলন তাদের গণতান্ত্রিক মৌলিক অধিকার। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য গতকালকের মত আজকেও রাজধানীর মিরপুর ও গাজীপুরে পুলিশ-আওয়ামী লীগের কর্মীরা পোশাক শ্রমিকদের ওপর ন্যাক্কারজনক হামলা চালিয়েছে। আমরা এই হামলার নিন্দা জানাচ্ছি এবং মালিকপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি সময়ক্ষেপণ না করে দ্রততম সময়ের মধ্যে পোশাক শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার।
নেতৃদ্বয় বলেন, তৈরি পোশাক খাতের মালিকদের সংগঠন ‘বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি’র আজকের সংবাদ সম্মেলন আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে আমরা মনে করি বিজিএমই শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেওয়ার বদলে শ্রমিকদের হুমকি দিয়ে কাজে ফেরানোর চেষ্টা করছে। এটি কোনোভাবে গ্রহণযোগ্য সমাধান হতে পারে না।
শ্রমিকদের দাবি পূরণে বিজিএমই আন্তরিক হলে শ্রমিকদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি হতো না। শ্রমিকরা ধনী হতে চায় না। তারা দুবেলা দুমুঠো খেয়ে বাঁচতে চায়। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে মালিকরা চায় না শ্রমিকরা ভালোভাবে বেঁচে থাকুক। তারা শ্রমিকদের পিষে মারতে চায়। অথচ শ্রমিকদের দিনরাত পরিশ্রমের কারণে পোশাক শিল্প এতদূর পৌঁছিয়েছে। মালিকরা তা বেমালুম ভুলে গিয়েছে। শ্রমিকদের এই দুর্দিনে শ্রম অধিদপ্তর, শ্রম মন্ত্রণালয়ের নিস্ক্রিয়তা জাতি অবাক দৃষ্টিতে পর্যবেক্ষণ করছে। শ্রমিকদের সমস্যা সমাধানে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত তাদের হস্তক্ষেপ প্রত্যক্ষ করা যায়নি।
আমরা স্পষ্টভাষায় বলতে চাই, শ্রমিকরা বর্তমান বাজারের তুলনায় খুব সামান্য বেতন-ভাতা দাবি করেছে। এটি কোনো অন্যায্য দাবি না। মালিকরা উচ্চমূল্যে পোশাক রপ্তানি করলেও শ্রমিকের শ্রম মূল্য দিচ্ছে না। তারা নানা অজুহাত পেশ করে বছরের পর বছর শ্রমিকদের ঠকিয়ে আসছে। এই সময়ে বিশ্বের অন্যান্য দেশে তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিকদের বেতন-ভাতা বাংলাদেশ থেকে কয়েকগুণ বেশি। শ্রমিকরা তাদের সম বেতন দাবি করেনি। তারা বেঁচে থাকার মত বেতন-ভাতা চেয়েছে। আমরা প্রত্যাশা করি স্বল্প সময়ের মধ্যে মালিকরা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিবে এবং শ্রমিকরা কাজে ফিরে যাবে।