বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে শ্রমজীবী মানুষরা আজ দিশেহারা। মূল্যস্ফীতির কারণে আজ বাজারে প্রতিটি জিনিসের দাম কয়েকগুণ বেড়েছে। শ্রমজীবী মানুষরা অনাহারে-অর্ধহারে জীবন অতিবাহিত করছে। জীবিকার জন্য তাদের কঠিন সংগ্রাম করতে হচ্ছে।
তিনি আজ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন আয়োজিত অঞ্চল দায়িত্বশীল বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান, গোলাম রব্বানী, লস্কর মো. তসলিম, কবির আহমেদ,মুজিবুর রহমান ভূঁইয়া ও মনসুর রহমান প্রমুখ।
আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, ক্ষমতাসীন সরকার জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তারা জন দুর্ভোগ দেখতে পায় না। লক্ষ লক্ষ বনি আদম আজ যে করুণ অবস্থায় নিপতিত তার জন্য সরকারই দায়ী। তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীদের পক্ষ নিয়েছে। বাজার নিয়ন্ত্রণ না করে অসাধু ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট করে মুনাফা করার সুযোগ দিয়েছে। এসব ব্যবসায়ীরা চাল ডাল তেল হতে শুরু করে সব পণ্যের দাম কারসাজি করে বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষরা পরিবার পরিজন নিদারুণ খাদ্য কষ্ট ভোগ করছে। অথচ সরকার নিশ্চুপ হয়ে আছে। তারা দাম বেধে দেওয়ার নামে সাধারণ মানুষের সাথে মশকরা করছে।
তিনি আরও বলেন, সরকার কথায় কথায় রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কথা বলে দায় এড়ানোর চেষ্টা করে। পৃথিবীর অন্য সকল দেশ দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে পারলেও সরকার ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা দেখছি আমাদের কৃষকরা ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অথচ কৃষকের উৎপাদিত ফসল মধ্যস্বত্বভোগীরা চড়া দামে বিক্রি করে অধিক মুনাফা লাভ করছে। গরিব মেহনতি মানুষের পকেট ও পেট স্বস্তিতে না থাকলে দেশের উন্নয়নের কোনো মূল্য নেই। এই উন্নয়ন অর্থহীন। আজকে যারা এসব মানুষদের নিদারুণ কষ্ট দিচ্ছে কেয়ামতের ময়দানে নিঃসন্দেহে আল্লাহ কাছে কঠিন জবাবদিহি করতে হবে। আজকের অপকর্মের জন্য কঠিন শাস্তিভোগ করতে হবে।
গার্মেন্টসসহ সকল প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি ২৫ হাজার টাকা নির্ধারণের দাবি জানিয়ে তিনি বলেন বর্তমান মজুরি দিয়ে শ্রমিকদের সংসার চলে না। অবশ্যই নতুন মজুরি কাঠামো গঠন করতে হবে। একই সাথে অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
শামসুল ইসলাম শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের নেতাকর্মীদের অসহায় শ্রমজীবী মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, নিজ নিজ সামর্থ্যরে আলোকে শ্রমজীবী মানুষের কষ্ট লাঘবে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা প্রয়োজনে খাবার ভাগাভাগি করে খাবো। কম খাবো কিন্তু কোনো শ্রমিক ভাইবোনকে অনাহারে জীবন অতিবাহিত করতে দিবো না।