No Result
View All Result
English
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
  • হোম
  • সংগঠন
    • সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সংগঠন অবকাঠামো
    • সাংগঠনিক স্তর
    • কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ
    • কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • অঞ্চল
    • মহানগরী
    • জেলা
    • উপজেলা
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • কার্যক্রম
    • বিভাগীয় কার্যক্রম
      • ট্রেড ইউনিয়ন
      • শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
      • সাহায্য ও পুনর্বাসন
      • সংস্কৃতি
      • শ্রমিক সেবা
      • সমাজকল্যাণ
      • সংগঠন ও রাজনীতি
      • স্বাস্থ্যসেবা
      • আইন ও মানবাধিকার
      • পরিবেশ ও কৃষিউন্নয়ন
      • যুব ও ক্রীড়া
      • আন্তর্জাতিক
    • সেক্টর ভিত্তিক কার্যক্রম
      • পরিবহন
      • গার্মেন্টস
      • কৃষি
      • রিক্সা ভ্যান
      • নৌ-পরিবহন
      • স্থল বন্দর
      • চাতাল
      • দর্জি
      • নির্মাণ শ্রমিক
  • প্রকাশনা
    • বই
    • সাময়িকী
    • পোস্টার
    • স্টিকার
    • লিফলেট
    • নববর্ষ
    • স্মারক
    • স্মরণিকা
    • বিজ্ঞাপন
  • গ্যালারি
    • ছবি
    • ভিডিও
  • সংবাদ
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • চলতি বিষয়
  • আর্কাইভ
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • অন্যান্য
  • যোগাযোগ
  • হোম
  • সংগঠন
    • সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সংগঠন অবকাঠামো
    • সাংগঠনিক স্তর
    • কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ
    • কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • অঞ্চল
    • মহানগরী
    • জেলা
    • উপজেলা
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • কার্যক্রম
    • বিভাগীয় কার্যক্রম
      • ট্রেড ইউনিয়ন
      • শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
      • সাহায্য ও পুনর্বাসন
      • সংস্কৃতি
      • শ্রমিক সেবা
      • সমাজকল্যাণ
      • সংগঠন ও রাজনীতি
      • স্বাস্থ্যসেবা
      • আইন ও মানবাধিকার
      • পরিবেশ ও কৃষিউন্নয়ন
      • যুব ও ক্রীড়া
      • আন্তর্জাতিক
    • সেক্টর ভিত্তিক কার্যক্রম
      • পরিবহন
      • গার্মেন্টস
      • কৃষি
      • রিক্সা ভ্যান
      • নৌ-পরিবহন
      • স্থল বন্দর
      • চাতাল
      • দর্জি
      • নির্মাণ শ্রমিক
  • প্রকাশনা
    • বই
    • সাময়িকী
    • পোস্টার
    • স্টিকার
    • লিফলেট
    • নববর্ষ
    • স্মারক
    • স্মরণিকা
    • বিজ্ঞাপন
  • গ্যালারি
    • ছবি
    • ভিডিও
  • সংবাদ
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • চলতি বিষয়
  • আর্কাইভ
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • অন্যান্য
  • যোগাযোগ
No Result
View All Result
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

কুরবানির ঈদ উৎসব এবং মানবিক সমাজ

ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ

মে ২৫, ২০২৩
কুরবানির ঈদ উৎসব এবং মানবিক সমাজ
Share on FacebookShare on Twitter

ঈদ উৎসব মানেই ধনী-গরিবের মিলনমেলা; মালিক শ্রমিকের ভালোবাসার সেতুবন্ধন। কুরবানির ঈদ হলে তো কথাই নেই। এ উৎসব যেনো মহানুভবতার ফল্গুধারা। মানুষ মানুষের জন্য- এমন মানবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। এমন মহৎ উৎসবের দৃষ্টান্ত রয়েছে আল্লাহর বিধানে। ঈদুল আজহা এমন উৎসবের উজ্বল দৃষ্টান্ত। ঈদ শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠানই নয়, সামাজিক উৎসবও বটে। সমষ্টিগতভাবে আনন্দের অধিকারগত উৎসব। ঈদুল আজহার একটি অন্যতম প্রধান কাজ হচ্ছে কুরবানি। কুরবানি হল আত্মশুদ্ধি এবং পবিত্রতার মাধ্যম। এটি সামাজিক রীতি হিসেবে পরিলক্ষিত হলেও আল্লাহর সন্তোষ্টির জন্যই এ রীতি প্রবর্তিত হয়েছে। আমাদের বিত্তবৈভব, শ্রম-সংসার এবং সমাজ-সংস্কৃতি সবই তাঁর উদ্দেশ্যেই নিবেদিত। কুরবানি হচ্ছে সেই নিবেদনের একটি প্রতীক। তাইতো ঈদুল আজহাকে বলা হয় ইয়াওমুন নহর। এই উৎসবের প্রধান উদ্যেশ্যই হলো মহান আল্লাহর নিমিত্তে কুরবানি এবং মানুষ হয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তাইতো এ উৎসব মহানুভবতার। এ উৎসব মানবতার। তোমার তরে সিজদা আমার তোমার জন্য আমার সকল কাজ/ কুরবানি দেই তোমার রাহে দাও গো প্রভু কোরানের সমাজ।

কুরবানি বা ত্যাগের সূচনা অধুনাকালে নয়। এর ধারাবাহিকতা এসেছে আদিপিতা হযরত আদম (আ.) থেকে। কুরবানির নজরানা পেশ করেছেন হযরত আদম (আ.) এর পুত্রদ্বয় হাবিল এবং কাবিল। ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় এ নজরানা চলতে চলতে হযরত ইবরাহিম (আ.) এর জীবনের চরম পরীক্ষার চ্যালেঞ্জ নেমে আসে। স্বীয় পুত্রকে কুরবানি করার কঠিন পরীক্ষায় হৃদয়ের খুলুসিয়াতের বদৌলতে উত্তীর্ণ হন তিনি। মক্কা নগরীর জনমানবহীন ‘মিনা’ প্রান্তরে আল্লাহর দুই আত্মনিবেদিত বান্দা ইবরাহীম ও ইসমাঈল (আ.) আল্লাহর কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের মাধ্যমে তুলনাহীন ত্যাগের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, বর্ষপরম্পরায় তারই স্মৃতিচারণ হচ্ছে ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ। আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণের প্রকৃষ্ট নমুনা এই কুরবানিতে প্রতীয়মান। মুসলিম জাতির পিতার এ ক্রমধারা অবলম্বনের মধ্যদিয়ে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর সুন্নতে এ ত্যাগ মানবিকতার আবহে ছড়িয়ে পড়েছে।

হযরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন হিজরত করে মদীনায় এলেন তখন মদীনাবাসীর দুটি উৎসবের দিবস ছিল। তিনি তাদের জিজ্ঞেস করলেন, এ দুটি দিবস কী? অর্থাৎ কী হিসেবে তোমরা এ দু’দিন উৎসব পালন কর? তারা বলল, ইসলামপূর্ব যুগে আমরা এ দিন দুটিতে উৎসব পালন করতাম। তখন তিনি বললেন, আল্লাহ তোমাদেরকে এ দুটি দিনের পরিবর্তে এর চেয়ে উত্তম দুটি দিন দান করেছেন- ঈদুল আজহা ও ঈদুল ফিতর।’ মূলত বিভিন্ন জাতি ও সম্প্রদায়ের উৎসবসমূহ প্রকৃতপক্ষে তাদের আকীদা-বিশ্বাস, চিন্তা-চেতনা ও ইতিহাস-ঐতিহ্যের মুখপত্র এবং তাদের জাতীয় চরিত্রের দর্পণ হয়ে থাকে। এ কারণে একথা স্পষ্ট যে, ইসলামের আগে জাহিলিয়া যুগে মদীনার লোকেরা যে দুটি উৎসব পালন করত এগুলো জাহিলী চরিত্র ও চিন্তা-চেতনা এবং জাহিলী ঐতিহ্যেরই দর্পণ ছিল। অর্থাৎ সে উৎসবে ছিলো অনৈতিকতা এবং নোংরামীর ছোঁয়াযুক্ত আনন্দ। সে আনন্দের মধ্যে শয়তানের চেতনা জাগ্রত ছিলো। ছিলো শিরকের পঁচা দুর্গন্ধ। স্বয়ং আল্লাহ তাআলা এ প্রাচীন উৎসবগুলোকে বাতিল করে দিয়ে এগুলোর স্থলে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার দুটি উৎসব এ উম্মতের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যা এ উম্মতের তাওহীদী চরিত্র ও জীবনধারার সাথে সম্পূর্ণ সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং তাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য এবং বিশ্বাস ও চিন্তা-চেতনার আয়না স্বরূপ।

মক্কা নগরীর জনমানবহীন ‘মিনা’ প্রান্তরে আল্লাহর দুই আত্মনিবেদিত বান্দা ইবরাহীম ও ইসমাঈল (আ.) আল্লাহর কাছে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণের মাধ্যমে তুলনাহীন ত্যাগের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিলেন, বর্ষপরম্পরায় তারই স্মৃতিচারণ হচ্ছে ঈদুল আজহা বা কুরবানির ঈদ।

ঈদ আল্লাহর পক্ষ হতে নির্দেশিত এক নির্মল আনন্দের উৎসব। হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, আমাকে ‘ইয়াওমুল আজহা’র আদেশ করা হয়েছে অর্থাৎ, এ দিবসে কুরবানি করার আদেশ করা হয়েছে; এ দিবসকে আল্লাহ তাআলা এই উম্মতের জন্য ঈদ বানিয়েছেন। (মুসনাদে আহমাদ, সুনানে আবু দাউদ, সুনানে নাসায়ী)।

কুরবানি করা ঈদুল আজহার অন্যতম প্রধান বিষয়। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) বলেন নবীজী (সা.) মদীনার দশ বছরের প্রতি বছরই কুরবানি করেছেন। হযরত বারা ইবনে আযীব (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিলেন। তাতে বললেন, আমাদের এই দিবসে প্রথম কাজ নামাজ আদায় করা, এরপর কুরবানি করা। সুতরাং যে এভাবে করবে তার কাজ আমাদের তরীকা মতো হবে। আর যে আগেই যবেহ করেছে তা পরিবারের জন্য গোশতখাওয়া মাত্র, আল্লাহর জন্য কুরবানি নয়।’ বৈধ বিনোদন আনন্দ, খেলাধুলাও ঈদের সংস্কৃতি। তবে এ ক্ষেত্রে শরীয়াহর সীমারেখা মাথায় রাখতে হবে। এ আনন্দ যেনো পাশবিকতা বা স্বার্থপরতায় পরিণত না হয়। নবীজী ঈদুল ফিতরের দিন কোনো কিছু না খেয়ে ঈদগাহে যেতেন না। আর ঈদুল আজহার দিন নামাজ না পড়ে কিছু খেতেন না। ঈদুল আজহার দিন নামাজের পরে খাওয়ার কারণ সম্ভবত এ হবে যে, এ দিন যেন সবার আগে কুরবানির গোশতই মুখে উঠে, যা আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে এক ধরনের দাওয়াত ও আপ্যায়ন।

কুরবানি দাতা নিজ হাতে কুরবানির পশু জবেহ করা উত্তম। তবে প্রয়োজনে অন্য লোক দ্বারাও জবেহ করা যেতে পারে। আনাস ইবনে মালিক (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) দুটি সাদা-কালো বর্ণের বড়ো শিং বিশিষ্ট পুং দুম্বা কুরবানি করেছেন। আমি দেখেছি, তিনি দুম্বা দুটির গর্দানে পা রেখে ‘বিসমিল্লাহি ওয়াল্লাহু আকবার’ বললেন। অতঃপর নিজ হাতে যবেহ করলেন।’ কুরবানির উট অন্তত পাঁচ বছর বয়সী হতে হবে। গরু, মহিষ দুই বছর এবং ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা এক বছর হতে হবে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, তোমরা মোটা-তাজা পশু দ্বারা কুরবানি কর। কেননা এ পশু পুলসিরাতে তোমাদের সওয়ারী হবে। রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, হে ফাতিমা আপন কুরবানির নিকট যাও। কুরবানির প্রথম রক্ত বিন্দুতে তোমার সমস্ত গুনাহ মাফ হবে। জন্তুটি কেয়ামতের দিন সমুদয় রক্ত, মাংস ও শিং নিয়ে উপস্থিত হবে এবং তোমার আমলের পাল্লা ৭০ গুণ ভারী হবে। হযরত বারা ইবনে আযিব (রা.) কুরবানির পশু সম্পর্কে আলোচনা করতে গিয়ে বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) হাত দিয়ে ইশারা করেছেন। আমার হাত তো তাঁর হাত থেকে ছোট। তিনি বলেছেন, ‘চার ধরনের পশু দ্বারা কুরবানি করা যায় না। যে পশুর এক চোখের দৃষ্টিহীনতা স্পষ্ট, যে পশু অতি রুগ্ন, যে পশু সম্পূর্ণ খোড়া এবং যে পশু এতো শীর্ণ যে তার হাড়ে মগজ নেই।’ আলী ইবনে আবী তালিব (রা.) বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সা.) আমাদের শিং-ভাঙা বা কান-কাটা পশু দ্বারা কুরবানি করতে নিষেধ করেছেন।’ কুরবানি প্রকৃতপক্ষে বান্দার পক্ষ থেকে আল্লাহর দরবারে নজরানা নিবেদনের নাম। এ জন্য এটা জরুরি যে, নিজের সামর্থ্য অনুযায়ী এর জন্য উত্তম ও ভালো পশু নির্বাচন করা।

গরু, মহিষ দুই বছর এবং ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা এক বছর হতে হবে। নবী করিম (সা.) বলেছেন, তোমরা মোটা-তাজা পশু দ্বারা কুরবানি কর। কেননা এ পশু পুলসিরাতে তোমাদের সওয়ারী হবে। রাসুল (সা.) আরও বলেছেন, হে ফাতিমা আপন কুরবানির নিকট যাও।

কুরবানি গোশত নিজেও খাবো এবং অন্যকেও খাওয়াবো। যাকে খুশি থাকে প্রদান করা যাবে। তবে গোশত তিন ভাগ করে এক ভাগ নিজের জন্য এক ভাগ আতœীয়-স্বজনের জন্য এবং অপর এক ভাগ দরিদ্র, নিঃস্বদের মাঝে বিলিয়ে দেওয়া মুস্তাহার। সহিহ মুসলিম শরীফে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা.) এর এক বর্ণনায় আছে ‘খাও, সংরক্ষণ কর এবং সদকা কর।’ কুরবানির পশুর গোশত-চামড়া বিক্রি করা বা পারিশ্রমিক হিসেবে কসাইকে দেওয়া যাবে না। আলী ইবনে আবী তালিব (রা.) বলেন, নবী (সা.) আমাকে তাঁর কুরবানির উটের আনুষঙ্গিক কাজ সম্পন্ন করতে বলেছিলেন। তিনি কুরবানির পশুর গোশত, চামড়া ও আচ্ছাদনের কাপড় ছদকা করতে আদেশ করেন এবং এর কোনো অংশ কসাইকে দিতে নিষেধ করেন। তিনি বলেছেন, আমরা তাকে তার পারিশ্রমিক নিজেদের পক্ষ থেকে দিব।

মানুষের জীবনে সকল জিনিসের চেয়ে আল্লাহ এবং তার নির্দেশকে সর্বাগ্রে স্থান দেওয়ার শিক্ষা রয়েছে কুরবানিতে। কাম, ক্রোধ, লোভ, লালসা প্রভৃতি আল্লাহপ্রেম বিরোধী রিপুগুলোকে আল্লাহ তায়ালার নির্দেশ অনুযায়ী বশ ও দমন করার শিক্ষাও রয়েছে কুরবানিতে। প্রতি বছর আমাদের মাঝে ঈদুল আজহা ও কুরবানির ঈদ ফিরে আসে ত্যাগের মহিমা ও আদর্শ নিয়ে। ত্যাগ ছাড়া কখনোই কল্যাণকর কিছু অর্জন করা যায় না। ত্যাগের মধ্যেই রয়েছে প্রশান্তি ও অফুরন্ত রহমত। আমাদের মাঝে লুকিয়ে থাকা লোভ-লালসা, মিথ্যা, অনাচার, অবিচার, অত্যাচার, জুলুম, হানাহানি, স্বার্থপরতা, দাম্ভিকতা, আত্মম্ভরিতা, অহমিকা, দুর্নীতি, সুদ, ঘুষ, গিবত, পরনিন্দা, হিংসা-বিদ্বেষ, চুরি-ডাকাতি, সন্ত্রাসী কর্মকাÐ ইত্যাদিকে পরিত্যাগ করতেই এ কুরবানির আয়োজন।

কুরবানির ক্ষেত্রে নিয়তের বিশুদ্ধতা খুব জরুরি। অনেকে মনে করেন, এ দুর্যোগপূর্ণ সময়ে যে অর্থনৈতিক টানাপোড়েন যাচ্ছে তাতে কুরবানি করা কষ্টকর। কিন্তু কুরবানি না করলে লোকজন খারাপ ভাববে। ছেলে মেয়ে নাতি নাতনী আত্মীয় স্বজনকে খাওয়াতে তো গোশত কিনতেই হবে। তাই কুরবানি দেওয়াই ভালো। এমন নিয়তের কুরবানি করলে শুধুমাত্র গোশত খাওয়াই হবে। কুরবানি হবে না। মহান আল্লাহ নিয়তের বিশুদ্ধতা দেখতে চান। তিনি দেখতে চান আত্মত্যাগের নজরানা। মহান আল্লাহ পবিত্র কুরআনে সুরা হজ্জের ৩৭ নাম্বার আয়াতে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় কুরবানিদাতাদের সাবধান করে দিয়েছেন, ‘কুরবানির পশুর রক্ত, গোশত কোন কিছুই আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, পৌঁছে কেবল তোমাদের তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি।’ অর্থাৎ কুরবানিদাতা যেন আল্লাহর ভয়ে ভীত হয়ে তাঁর সন্তুষ্টির জন্যই কুরবানি করে। কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁর কুরবানি কবিতায় উল্লেখ করেন- ওরে হত্যা নয় আজ সত্যাগ্রহ শক্তির উদ্বোধন/ ঐ খুনের খুঁটিতে কল্যাণকেতু লক্ষ্য ঐ তোরণ/ আজি আল্লাহর নামে জান কোরবানে/ ঈদের পূতবোধন।

ঈদুল আজহার মূল আহ্বান হচ্ছে মহান আল্লাহর প্রতি একনিষ্ঠ আনুগত্য প্রকাশ করা। সকল দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে এক আল্লাহর দিকে রুজু হওয়া। সম্পদের মোহ, ভোগ-বিলাসের আকর্ষণ, সন্তানের স্নেহ, স্ত্রীর মুহাব্বত সবকিছুর ঊর্ধ্বে আল্লাহর সন্তুষ্টি প্রতি আত্মসমর্পণ করে দেওয়াই ঈদুল আজহার মূল শিক্ষা। আল্লাহর ভালোবাসায় তাঁর হুকুম মোতাবেক জীবনের সর্বাধিক প্রিয় একমাত্র সন্তানকে নিজ হাতে যবহ করার কঠিনতম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন হযরত ইবরাহিম (আ.)। তিনি প্রমাণ করেছেন, আল্লাহর ভালোবাসার চাইতে পুত্রের ভালোবাসা বড়ো নয়। মহান আল্লাহ এই পরীক্ষাই নিতে চেয়েছিলেন। এটাই প্রকৃত তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি।

মানুষ আল্লাহর জন্য সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করবে, এই শিক্ষাই ইবরাহীম (আ.) আমাদের জন্য রেখে গেছেন। কুরবানি একটি প্রতীকী ব্যাপার। আল্লাহর জন্য আত্মত্যাগের একটি দৃষ্টান্ত মাত্র। সারা বছরই আল্লাহর নৈকট্য লাভের প্রত্যাশায় নিজ সম্পদ অন্য মানুষের কল্যাণে ত্যাগ করতে হবে। এই ত্যাগের মনোভাব যদি গড়ে ওঠে। তবে বুঝতে হবে, কুরবানির ঈদ সার্থক হয়েছে, কুরবানি সার্থক হয়েছে। নইলে এটি নামমাত্র একটি ভোগবাদী অনুষ্ঠানই থেকে যাবে চিরকাল। আল-কুরআনে আল্লাহ বারবার ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছেন। সুরা বাকারার ২৬৭ আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা তোমাদের উপার্জিত হালাল মালের কিছু অংশ এবং আমি যা তোমাদের জন্য জমিন হতে বের করেছি তার অংশ ব্যয় কর।’ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায় বলতে হয়, ‘তোরা ভোগের পাত্র ফেলরে ছুঁড়ে, ত্যাগের তরে হৃদয় বাঁধ।’

সুরা হজ্জের ৩৭ নাম্বার আয়াতে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় কুরবানিদাতাদের সাবধান করে দিয়েছেন, ‘কুরবানির পশুর রক্ত, গোশত কোন কিছুই আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, পৌঁছে কেবল তোমাদের তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি।’

পরিশেষে বলা যায়, ইতোমধ্যে করোনার ক্রান্তিকাল অতিক্রম করেছি আমরা। তারপরেও ভীষণ অসহায় এখনও মানবতা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে জীবন জীবিকা চরম কষ্টের মধ্যে নিপতিত। শ্রমজীবী মানুষ থেকে শুরু করে ছোট থেকে বড়ো সব ধরনের চাকরিজীবীদের এখন ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা। আতঙ্কিত এ সময়ে মানবিকতার মূল্যবোধে মমত্ববোধের পরিচয় দেওয়া জরুরি। কেউ কেউ মনে করেন, কুরবানি না করে সেই টাকা গরিবদের মাঝে বিতরণ করে দেওয়া হোক। না, এমনটি ভাবার সুযোগ নেই। বরং মহান আল্লাহর নির্দেশিত এ কুরবানির বিধান মেনেই আমাদের সম্পদ থেকে অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। আমাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদ মানবতার সেবায় ব্যয় করতে হবে। দরিদ্র মানুষের সহযোগিতায় সরকারের পাশাপাশি সকল বিত্তশালী লোককে এগিয়ে আসতে হবে। সারা বছর, সারা জীবন সাধ্যমত আল্লাহর সন্তুষ্টি ও নৈকট্য লাভের কথা বিবেচনা করে মানুষকে সাহায্য করতে হবে। ঈদুল আজহার লক্ষ্য হচ্ছে সকলের সাথে সদ্ভাব, আন্তরিকতা এবং বিনয়-নম্র আচরণ করা। হৃদয় আর সম্পদের মিল ঘটানোর মাধ্যমে মানবিক সমাজ গড়ার জন্যই আল্লাহ পবিত্র কুরআনে বারবার মানুষকে আহ্বান করেছেন। শ্রমজীবী অসহায় মানুষের জন্য মালিক পক্ষ থেকে কুরবানির ব্যবস্থা হতে পারে। যে সকল শ্রমিকের কুরবানি করার সক্ষমতা নেই, ঈদের দিনে তারা আনন্দের সাথে খাবার খেতে পারবে। লোক দেখানোর জন্য নয়, মহান আল্লাহর সন্তোষ্টির জন্যই এমনটি করা উচিত। আমার লেখা একটির গানের কলি হোক সকলের ঈদ উচ্চারণ-
তোমার তরে সিজদা আমার তোমার জন্য আমার সকল কাজ
কুরবানি দেই তোমার রাহে দাও গো প্রভু কোরানের সমাজ।

[লেখক: কবি ও গবেষক; প্রফেসর, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়।]

সর্বশেষ সংযোজন

নববর্ষের প্রকাশনা ইসলামী শ্রমনীতির আন্দোলনকে বেগবান করবে : আ ন ম শামসুল ইসলাম

নববর্ষের প্রকাশনা ইসলামী শ্রমনীতির আন্দোলনকে বেগবান করবে : আ ন ম শামসুল ইসলাম

ডিসেম্বর ২, ২০২৩

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, ইসলামী শ্রমনীতিতে শ্রমজীবী মানুষের প্রকৃত মুক্তি নিহিত...

কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় শ্রমিকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: আ ন ম শামসুল ইসলাম

কল্যাণমুখী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় শ্রমিকদের ভূমিকা অগ্রগণ্য: আ ন ম শামসুল ইসলাম

নভেম্বর ৩০, ২০২৩

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, কল্যাণমুখী রাষ্ট্র ব্যবস্থা ছাড়া মেহনতি শ্রমজীবী মানুষের...

সালাম-এর রীতিনীতি

সালাম-এর রীতিনীতি

নভেম্বর ১৬, ২০২৩

আমরা মানুষ। সমাজবদ্ধ হয়ে বাস করাই আমাদের প্রধান বৈশিষ্ট্য। সুস্থ, সুন্দর ও আল্লাহভীতিবান্ধব সমাজ গঠন করা আমাদের সকলের কর্তব্য। মানুষ...

শ্রমিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য

শ্রমিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য

নভেম্বর ১৬, ২০২৩

মুসলিম মানে অনুগত। আর ইসলাম অর্থ আনুগত্য। মুসলিমের কাজ হচ্ছে ইসলাম। আল্লাহ ও রাসুলের অনুগত ব্যক্তিকে মুসলিম বলে। মুসলিম সর্বদাই...

প্রশ্নোত্তরে শ্রম আইন: অংশগ্রহণ তহবিল ও প্রভিডেন্ট ফান্ড

প্রশ্নোত্তরে শ্রম আইন: অংশগ্রহণ তহবিল ও প্রভিডেন্ট ফান্ড

নভেম্বর ১৫, ২০২৩

১। প্রশ্ন: অংশগ্রহণ তহবিলে কোম্পানি মুনাফার কত শতাংশ জমা করতে হয়? উত্তর: শ্রম আইন ২০০৬ সালের ধারা ২৩৪ উপধারা ১...

যোগাযোগ:

৪৩৫, এলিফ্যান্ট রোড, বড় মগবাজার
ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
ফোনঃ ৮৩৫৮১৭৭, ৯৩৩১৫৮১/২৫

অন্যান্য লিংকসমূহ:

© 2019, Bangladesh Sramik Kalyan Federation

No Result
View All Result
  • হোম
  • সংগঠন
    • সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সংগঠন অবকাঠামো
    • সাংগঠনিক স্তর
    • কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ
    • কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • অঞ্চল
    • মহানগরী
    • জেলা
    • উপজেলা
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • কার্যক্রম
    • বিভাগীয় কার্যক্রম
      • ট্রেড ইউনিয়ন
      • শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
      • সাহায্য ও পুনর্বাসন
      • সংস্কৃতি
      • শ্রমিক সেবা
      • সমাজকল্যাণ
      • সংগঠন ও রাজনীতি
      • স্বাস্থ্যসেবা
      • আইন ও মানবাধিকার
      • পরিবেশ ও কৃষিউন্নয়ন
      • যুব ও ক্রীড়া
      • আন্তর্জাতিক
    • সেক্টর ভিত্তিক কার্যক্রম
      • পরিবহন
      • গার্মেন্টস
      • কৃষি
      • রিক্সা ভ্যান
      • নৌ-পরিবহন
      • স্থল বন্দর
      • চাতাল
      • দর্জি
      • নির্মাণ শ্রমিক
  • প্রকাশনা
    • বই
    • সাময়িকী
    • পোস্টার
    • স্টিকার
    • লিফলেট
    • নববর্ষ
    • স্মারক
    • স্মরণিকা
    • বিজ্ঞাপন
  • গ্যালারি
    • ছবি
    • ভিডিও
  • সংবাদ
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • চলতি বিষয়
  • আর্কাইভ
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • অন্যান্য
  • যোগাযোগ

© 2019 Bangladesh Sramik Kalyan Federation