বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান আজ এক যৌথ বিবৃতিতে গত ১লা জুন জাতীয় সংসদে উত্থাপিত বাজেট প্রত্যাখান করে বলেছেন, অর্থমন্ত্রীর উত্থাপিত বিশাল বাজেটে শ্রমজীবী মানুষের সাথে চরম বৈষম্য করা হয়েছে। এই বাজেটকে কোনো ভাবেই শ্রমবান্ধব বলা যাবে না।
নেতৃদ্বয় বলেন, সরকার উন্নয়নের ঢাকঢোল পিটিয়ে সাধারণ মানুষের জীবন দুর্বিষহ করে ফেলেছে। সরকারের উন্নয়ন সাধারণ মানুষ তথা শ্রমজীবী মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। সাধারণ জনগণের পেট ও পকেট আজ স্বস্তিতে নেই। একদিকে দ্রব্যমূল্যের চরম ঊর্ধ্বগতিতে চলছে। অন্যদিকে কর্মসংস্থানহীন অবস্থায় রয়েছে কোটি কোটি মানুষ। প্রস্তাবিত বাজেটে এই সকল মানুষের জীবন স্বাভাবিক করার কোনো নির্দেশনা নেই। এই কথা দিবালোকের মত স্পষ্ট দেশের খেটে খাওয়া সাধারণ মানুষদের কোনো গুরুত্ব সরকারের কাছে নেই। যদি থাকতো বাজেটে তার প্রতিফলন থাকতো। অথচ দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখার জন্য শ্রমজীবী মানুষরা সর্বদা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অনবরত কষ্ট ভোগ করে যাচ্ছে। আজ তারাই রাষ্ট্রের দুয়ারে অপ্রয়োজনীয় ও অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়েছে। দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে তাদের অবদানকে তুচ্ছ করে দেখা হচ্ছে।
নেতৃদ্বয় বলেন, ক্ষমতাসীন সরকারের লোকদের সীমাহীন দুর্নীতি-লুটপাট ও বিদেশে অর্থপাচার, উন্নয়নের নামে অযথা প্রকল্পের নামে রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় অব্যাহতভাবে চলছে। অপরদিকে কাগজে কলমের হিসেব দেখিয়ে ধনী-গরিবের মধ্যকার বৈষম্য কম দেখিয়ে দেশকে মধ্যম আয়ের দেশ দেখানো হচ্ছে। এটি শুভঙ্করের ফাঁকি ছাড়া আর কিছুই না। সরকারের এহেন তৎপরতা দেশের প্রথিতযশা অর্থনীতিবিদ-সুশীল সমাজের পাশাপাশি সাধারণ শ্রমজীবী মানুষদের নির্বাক করে দিয়েছে। এই বাজেট যে উচ্চবিলাসী ও ঋণ নির্ভর ইতোমধ্যে অর্থনীতিবিদরা জানিয়ে দিয়েছেন।
নেতৃদ্বয় বলেন, অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য ৭ লাখ ৬১ হাজার ৭৮৫ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেছেন। এই বিশাল বাজেটে যে সব জিনিসের দাম কমানো হয়েছে তা সাধারণ গরিব মানুষ কিনে না। সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বাড়োনো হয়েছে। বাজেটে শিক্ষা উপকরণের দাম বাড়ানো হয়েছে। এক্ষেত্রে শ্রমিক পরিবারের সন্তানরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হবে। সব মিলিয়ে বলা যায় এই বাজেটের কোনো মূল্য শ্রমজীবী মানুষের কাছে নেই।
নেতৃদ্বয় বলেন, আমরা চাই শ্রমজীবী মানুুষ দুই বেলা পরিবার-পরিজন নিয়ে একটু ভালোভাবে খেয়েদেয়ে বেঁচে থাকুক। এই লক্ষ্যে অর্থমন্ত্রীকে অবশ্যই এই বাজেট সংশোধন করতে হবে। শ্রমজীবী মানুষের জন্য কল্যাণমুখী বাজেট প্রণয়ন করতে হবে।