আল্লাহ তায়ালার জন্য লাখো কোটি সিজদা নিবেদন করছি। গতিময় এ পৃথিবীর তিনিই একমাত্র নিয়ন্তা। তাঁরই অপার কুদরাতে চান্দ্র মাসের আবর্তে আমরা প্রতি বছর পেয়ে চলছি রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের মাস মাহে রমাদান। কল্যাণের পথযাত্রী প্রতিটি মুমিন আকাশের ইলাহের পানে দুআ করতে থাকবে যেনো আগত রমাদানেও প্রতিটি মুহূর্ত সে আপন মাবুদের সন্তুষ্টি অর্জনে ব্যস্ত থাকতে পারে। কর্মমুখর রমাদান পার করতে চাই কাঙ্ক্ষিত প্রস্তুতি। কল্যাণে ভরপুর মাসকে স্বাগত জানাতে আমাদের প্রস্তুতির উপর নির্ভর করছে আমরা কতটা কর্মময় করে তুলতে পারবো কুরআন নাযিলের মাসকে। সে প্রস্তুতি নিয়েই কিছু কথা।
কী সেই রমাদান
আল্লাহ বলেন, “রমাদান সেই মাস, যে মাসে আল-কুরআন নাযিল করা হয়েছে।” (বাকারা ১৮৫)। কল্যাণের পথে অগ্রগামীকে আরো অগ্রসর করার মাস রমাদান। মাসব্যাপী সিয়াম সাধনার মাধ্যমে কুরআন কারিমের বিধানের বাঞ্চিত অনুসরণের মাধ্যমে ব্যক্তি ও সমষ্টির পরিসরে তাকওয়ার যথার্থ অনুশীলনের মাস মাহে রমাদান। শয়তানদের পথচলাকে সঙ্কুচিত করে ঈমানদারের জিন্দেগীকে আনুগত্যের পথে আরো অগ্রসর করে দেওয়ার জন্যই মহিমান্বিত এ মাস। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “রমাদানের প্রথম রাত যখন ঘনীভূত হয়, তখন শয়তান ও দুষ্টু জিনগুলোকে আটক করা হয়, জাহান্নামের সকল দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়; একটাও খোলা হয় না, জান্নাতের সকল দরজা খুলে দেওয়া হয়; একটাও বন্ধ করা হয় না। আর একজন ঘোষক ডাকতে থাকেন, হে কল্যাণকামী! তুমি অগ্রসর হও, আর হে বিপথগামী! তুমি থেমে যাও, এমনিভাবে প্রতি রাত সে আহবান চলতে থাকে।” (তিরমিযী ৬৭২)
তাকওয়া অর্জন করাই আসল লক্ষ্য:
মাহে রমাদানের আগমন আমাদের জীবনে তাকওয়ার রং লেপ্টে দেওয়ার জন্য। আর তাকওয়া! সেতো বাস্তব জীবনে আল্লাহ তায়ালার সকল আদেশ বাস্তবায়ন আর সকল নিষেধ বর্জনের নাম। চতুর্থ খলিফায়ে রাশেদ আলী (রা:) বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালাকে ভয় করে নাযিলকৃত বিধান আল-কুরআন অনুযায়ী আমল করে পরকালীন পাথেয় যোগাড় করার নাম তাকওয়া।’ আল্লাহর ভয়ে সদা কম্পমান সে জীবন গঠন করার জন্য যে নিবিড় ও নিখুঁত কর্মসূচি প্রয়োজন, রমাদান বিশেষ সে কুদরাতি কর্মসূচির নাম। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তা-ই ইরশাদ করেন, ‘হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের উপর সিয়াম সাধনা ফরজ করা হয়েছে, যেমন ফরজ করা হয়েছে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর। আশা করা যায় তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করতে পারবে।’ (বাকারা ১৮৩)
কীভাবে প্রস্তুতি নিবেন তাকওয়া অর্জনের
এক. অব্যাহত দুআ করুন: দুআ ইমানদারের হাতিয়ার। নেক আমলের এ মহান মওসুম যেনো আবারো আমরা পেয়ে যাই সে জন্য রমাদানের মালিকের নিকট অব্যাহত দুআ করা জরুরি। রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুআ করতেন রজব থেকেই, ‘হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাসকে আমাদের জন্য রবকতময় করুন এবং রমাদান পর্যন্ত আমাদেরকে পৌঁছে দিন।’
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, “রমাদানের প্রথম রাত যখন ঘনীভূত হয়, তখন শয়তান ও দুষ্টু জিনগুলোকে আটক করা হয়, জাহান্নামের সকল দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়; একটাও খোলা হয় না, জান্নাতের সকল দরজা খুলে দেওয়া হয়; একটাও বন্ধ করা হয় না। আর একজন ঘোষক ডাকতে থাকেন, হে কল্যাণকামী! তুমি অগ্রসর হও, আর হে বিপথগামী! তুমি থেমে যাও, এমনিভাবে প্রতি রাত সে আহবান চলতে থাকে।” (তিরমিযী ৬৭২)
দুই. ক্বলবকে প্রস্তুত করুন: মেহমানের আগমনে যেমন ঘর সাজানোর আগে ঘরকে প্রস্তুত করতে হয়, তেমনি জীবনকে নেক আমলে সমৃদ্ধ করার জন্য ক্বলবকে পরিষ্কার করা আবশ্যক। ক্বলব গোশতের এমন একটি পিণ্ড যার সুস্থতার উপর সকল অঙ্গের নেক তৎপরতা নির্ভর করে। অন্তরের পরিচ্ছনতার গুরুত্ব টের পাই আমারা নবীজীর কথায়। হাদিসের বর্ণনা: রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করা হলো, কে সেরা মানুষ? নবিজি জবাবে বললেন, প্রত্যেক স্বচ্ছ ক্বলব ও সত্যবাদী জবান। সাহাবীরা বললেন: সত্যবাদী জবান তো আমরা চিনি, কিন্তু মাখমূমুল ক্বালব কী? আল্লাহর রাসূল বললেন, স্বচ্ছ ক্বলব হলো সেটি, যাতে গুনাহ নেই, নেই পরস্পরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ। (ইবনু মাজাহ: ৩৪১৬)
তিন. নেক কাজের নিয়ত করতে থাকুন: হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ তায়ালা বলেন “যখন আমার বান্দা একটি ভালো কাজ করার চিন্তা করে আমি তার জন্য এর বিনিময়ে একটি পূণ্য লিখি।” (মুসলিম, আবু হুরায়রা) তাই আমাদের উচিত ইখলাসের সাথে যথাসম্ভব ভালো ভালো কাজের নিয়তে মনকে ভরপুর করা। আমাদের বাঞ্চিত নিয়তগুলো যেমন হতে পারে-
১.সম্পূর্ণ কুরআন বুঝে পড়ার নিয়ত করা
২.খাঁটি তাওবাহর ইরাদা করা
৩.নেক আমল দিয়ে জীবনকে সাজানোর ইচ্ছা করা
৪.আচার-আচরণকে সুন্দর করার নিয়ত করা
৫.দ্বীন প্রচারের নিয়ত করা ইত্যাদি
চার. তাকওয়ার অনুশীলনে দেরি নয়: কাঙ্ক্ষিত নেক নিয়ত বাস্তবায়নে কালক্ষেপণ নয়; সূচনা আজই করতে হবে এবং তা সামর্থের আলোকে। কবিরা গুনাহগুলো ছেড়ে দেওয়ার জন্য রমাদান মাস আগমনের অপেক্ষা নয়। ‘রমাদান আসলে ঠিক হবো’– এ চিন্তা দুর্বল। দুর্বল নিয়তের বহিঃপ্রকাশ। এতে সমাগত মর্যাদাবান মেহমানকে যথাযথভাবে অভ্যর্থনার মানসিকতা প্রকাশ পায় না। নিশ্চিত মৃত্যুর আগমনের সময়টি অনিশ্চিত। তাই সম্ভাব্য নেক নিয়ত বাস্তবায়নে দেরি নয়।
পাঁচ. প্রয়োজনীয় জ্ঞানার্জন করুন: বিশুদ্ধ আমলের জন্য বিশুদ্ধ জ্ঞান জরুরি। তাই কুরআন, হাদিস ও নির্ভরযোগ্য অন্যান্য সূত্র থেকে এ মহিমান্বিত মাস সম্পর্কে জ্ঞানার্জন করতে হবে। যেমন ১. সুরা বাকারার ১৮৩-১৮৭ আয়াত পর্যন্ত অর্থসহ পড়া। ২. ‘রিয়াদুস সালেহীন’ হাদিস গ্রন্থের ‘সাওম’ অধ্যায়ের হাদিসগুলো পড়া। ৩. রমাদানের শিক্ষা সংক্রান্ত পুস্তুকাদি যেমন: লাতাইফুল মাআরিফ- ইবনুল কাইয়েম, ধুলিমলিন উপহার: রমাদান-আহমাদ মূসা জিবরীল ইত্যাদি।
ছয়. সময়কে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখুন: আমাদের কাজের সময়গুলোকে হত্যা করছে অনেক অগুরুত্বপূর্ণ বিষয় ও বস্তু। তা এখন থেকে নিয়ন্ত্রণ করতে শিখতে হবে। তাই জ্ঞানার্জনে মোবাইল-ইন্টারনেটের উপর অধিক নির্ভরশীল না হওয়া জরুরি।
সাত. পেছনের দায় মিটানো জরুরি: রমাদান আসার আগেই যাদের সুনির্দিষ্ট নামাজ কাযা আছে তা আগেই সম্পাদন করো নেওয়া দরকার। আর সাওমের মাসকে স্বাগত জানানোর আগেই পেছনের কাযা-কাফফারাগুলো শেষ করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
আট. আত্মীয়তার সম্পর্কগুলো জোড়া লাগান: আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী তো আল্লাহর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন্কারী। তবে আর কোন আমল দিয়ে আল্লাহর সাথে সম্পর্ক ঠিক রাখা যাবে? কতজনই তো এমন আছেন যারা আত্মীয়তার সম্পর্ক কেটে নেক কাজের প্রতিযোগিতা করছেন! তাই বিচ্ছিন্ন সম্পর্কগুলো আজই জোড়া লাগিয়ে নিতে হবে।
নয়. বিশেষ খরচের বাজেট তৈরি করুন :
এ খরচ একান্ত আপনার জন্য। তবে পাকস্থলী ভরার জন্যে নয়; নেকির পাহাড় বড়ো করার জন্যে। তাই আপনার নিয়মিত উপার্জনের একটি অংশ নির্দিষ্ট করুন যা আপনি নিম্নোক্ত কাজে খরচ করতে পারেন:
১. সাধারণ দান-খয়রাত।
২. রমাদান, কুরআন সংক্রান্ত লেখনি বিলি করে ইলম বিতরণের কাজ। যার সাওয়াব কেয়ামত অবদি লিখা হতে থাকবে।
৩. ইফতার করানো।
৪. ইফতার প্যাকেট। ইফতার সামগ্রী দিয়ে দরিদ্রদের জন্য প্যাকেট সাজিয়ে বিতরণ করা ইত্যাদি।
দশ. উমরা করার প্রস্তুতি নিন: আবশ্যক সব নেক কাজ সামলে সামর্থ থাকলে রমাদানে উমরাহ আদায়ের প্রস্তুতি নিতে পারেন। এটা আমলের ফ্যাশন শো নয়; বরং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা। রাসুল (সা.) এক আনসার মহিলাকে বললেন, রমাদান আসলে সে মাসে উমরা করো। কেননা রমাদানে উমরাহ হজের সমতুল্য।
এগারো. বিকল্প হজ ও উমরাহর অভ্যাস করুন: উমরার করার অর্থনৈতিক সামর্থ্য নেই? তবে প্রতিদিনই উমরাহ করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি জামাআতের সাথে ফজর আদায় করলো, অতঃপর সূর্যোদয় পর্যন্ত জিকির করলো, তারপর দুই রাকাআত সালাত আদায় করলো সে যেনো একটি হজ ও উমরাহ আদায় করলো। আনাস বলেন, রাসুল (সা.) বললেন, পরিপূর্ণ হজ ও উমরাহ, পরিপূর্ণ হজ ও উমরাহ। সুহানাল্লাহ! তবে কেনো সাহরী খেয়েই ঘুমানোকে জরুরি মনে করবো?!
বারো. পরিবার-পরিজনকে সাথে নিন:
আসন্ন রমাদানে আপনার স্ত্রী, সন্তান, ভাই-বোন, অন্যান্য আত্মীয়-স্বজননের সাথে আপনার পরিকল্পনা শেয়ার করুন। তারা কী কী করতে চায় এ বরকতপূর্ণ মাসে তা জানুন। বিশেষ করে কিশোর তরুণদের একটি সুন্দর পরিকল্পনা প্রণয়নে সহযোগিতা করুন। এটাই আল্লাহ তায়ালার সেই নির্দেশের বাস্তবায়ন “হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদেরকে ও পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও। (তাহরীম-৬)”
তেরো. শেষ রাতে জাগতে অভ্যস্ত হউন: রাসুলুল্লাহর সুন্নাহ মেনে সলাতুল ইশার পর তাড়াতাড়ি ঘুমানোর অভ্যাস করা জরুরি। আগে থেকে অভ্যাস না থাকলে শুধু রমাদানে তা কঠিন হতে পারে। হতে পারে শুধু সাহরীর ভূরিভোজ। অন্যসব বরকতময় আমল বাদ পড়ে যেতে পারে।
চৌদ্দ. রমাদানী নয়, রব্বানী হওয়ার সিদ্ধান্ত নিন: এমন অনেক আছেন যারা শুধু রমাদানেই কিছু আমল করার সিদ্ধান্ত নেন। এটা দুর্বল চিন্তা। আমরা রমাদানের পূজা করবো না, আমরা তো রমাদানের রবের ইবাদত করবো। তাই রমাদানে কিছু ভালো আমল করে মাসটি পার হলেই আবার নাফরমানীর পথে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতান্তই দুর্বল চিন্তা; যথার্থ ঈমানের পরিচায়ক নয়।
পনেরো. রমাদানের ফলাফল নিয়ে ভাবতে থাকুন:
রমাদান মাসের ইবাদত বন্দেগীর মাধ্যমে আপনি কী অর্জন করবেন তা বারবার ভাবতে থাকুন। যেমন : আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ক্ষমা, জাহান্নাম থেকে মুক্তি, লাইলাতুল ক্বদর, ফিরিশতাদের ক্ষমাপ্রার্থনা, বহুগুণ বৃদ্ধি পাওয়া সাওয়াব ইত্যাদি। এসব বড় বড় প্রাপ্তির চিন্তা আপনাকে নেক আমল করার জন্য অনেক বেশি সতেজ করে তুলবে। করবে বরকতময় ব্যস্ততায় পরিপূর্ণ।
একজন রোজাদারের ব্যস্তময় দিন
ফজরের আগে:
১. সালাতুত তাহাজ্জুদ: আল্লাহ বলেন, ‘সে লোক যে রাতের প্রহরগুলিতে বিনত চিত্তে সিজদাবনত হয় ও দাঁড়িয়ে থাকে, ভয় করে আখিরাতকে এবং তার প্রভুর রহমত কামনা করে।’ (যুমার-৯)
২. সাহরী গ্রহণ: রাসুল স. বলেন, ‘তোমরা সাহরী গ্রহণ কর। কেননা তাতে বরকত রয়েছে।’ (বুখারি ও মুসলিম)
৩. ইস্তিগফার: আল্লাহ বলেন, ‘তারা সাহরীর মুহূর্তগুলোতে ক্ষমা প্রার্থনা করে।’ (যারিয়াত-১৮)
সুবহি সাদিকের পর:
১. ফজর সালাতের সুন্নাত আদায়। নবীজি বলেন, ‘ফজরের দু’রাকাআত সুন্নাত দুনিয়া এবং এর মধ্যস্থিত সব কিছু থেকে উত্তম।’ (মুসলিম)
২. ফজরের সালাত আদায়ের জন্য মসজিদে গমন। রাসুল (সা.) বলেন: “তারা যদি ইশা ও ফজরের ফজিলত সম্পর্কে জানতো তবে তারা হামাগুড়ি দিয়ে হলেও আসতো।” (বুখারি ও মুসলিম)
৩. সালাতের ইকামত পর্যন্ত যিকর ও দু’আতে ব্যস্ত থাকা। রাসুল (সা.) বলেন, “আযান ও ইকামতের মধ্যবর্তী দু’আ ফিরিয়ে দেওয়া হয় না।” (আহমাদ, তিরমিযী)।
৪. সূর্যোদয় পর্যন্ত যিকির ও কুরআন তেলাওয়াতে ব্যস্ত থেকে মসজিদে বসে থাকা।
৫. সূর্যোদয়ের পর দু’রাকাআত নামাজ পড়া। রাসুল (সা.) বলেন, “যে ব্যক্তি ফজর জামায়াতে আদায় করে বসে থাকবে, সূর্যোদয়ের পর দু’রাকাআত নামাজ পড়বে তার জন্য একটি পূর্ণ হজ্জ ও ওমরার সওয়াব লেখা হবে।” (তিরমিযী)
৬. প্রয়োজনে ঘুম বা বিশ্রাম নেওয়া। কেননা মু‘আয রা. বলেন, ‘আমি আমার কিয়ামে যেমন সওয়াব আশা করি তেমনি আমার ঘুমেও।’
৭. হালাল উপার্জন বা পড়ালেখামুখী ব্যস্ততা।
৮. সারাদিন আল্লাহ তায়ালার যিকির করা।
৯. সদাকার জন্য নির্ধারিত অংশ দান করার সাথে সাথে ফিরিশতার এ দু’আ অনুভব করা- “আল্লাহ! আপনি দানকারীকে দান করুন।”
জোহর:
১. জোহরের সালাত মসজিদে জামায়াতের সাথে আদায় করা।
২. রাতের ইবাদতে শক্তি জোগানোর নিয়তে প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নেওয়া।
আসর:
১. সালাতুল আসর জামায়াতের সাথে আদায়। তৎপূর্বে চার রাকায়াত সুন্নাত আদায় করা। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে আসরের পূর্বে চার রাকাআত পড়লো আল্লাহ তায়ালা তার প্রতি রহম করবেন।’ (আবু দাউদ, তিরমিযী)
২. মসজিদে নসীহাত শুনা। কারণ মসজিদে গমন করে শিক্ষার্থী বা শিক্ষক হতে পারলে পূর্ণ হজ্জের সওয়াব। (তাবরানী)
মাগরিব:
১. সূর্যাস্তের পূর্বে দু’আ করা। কেননা ইফতারের পূর্বে রোজাদারের দু’আ ফিরিয়ে দেওয়া হয় না। (তিরমিযী)।
২. ইফতার গ্রহণ।
৩. জামায়াতের সাথে সালাতুল মাগরিব আদায়।
৪. মসজিদে বসে সান্ধ্যকালীন যিকির আদায় করা।
৫.পরিবারের সাথে দ্বীনি মজলিস।
৬. সালাতুল ইশা ও তারাবীহ এর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ।
ইশা:
১. ইশার সালাত মসজিদে জামায়াতের সাথে আদায়।
২. ইমামের সাথে পূর্ণাঙ্গ তারাবীহ আদায় করা। রাসুল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমাদানে ঈমান ও ইহতিসাবসহ সালাতে দাঁড়াবে তার পূর্বের সকল গুনাহ ক্ষমা করা হবে।’
৩. শেষ রজনীতে সালাতুল বিতর আদায় করা। এটাই আল্লাহর রাসুলের সুন্নাত।
এ ছাড়া আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধবের সাথে সাক্ষাৎ, রমাদানে বিভিন্ন ইসলামী আয়োজন, ব্যক্তিগত অধ্যয়ন, পারিবারিক ইসলামী আসর ইত্যকার দ্বীনি আয়োজনের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করা।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে আগত রমাদান মাসকে উদযাপনের জন্য যথাযথ প্রস্তুতি সেওয়ার তাওফীক দান করুন এবং তাঁর নেক বান্দাহদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করুন। আমিন।
লেখক: শিক্ষক, খতিব, আলোচক ও গবেষক।