No Result
View All Result
English
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন
  • হোম
  • সংগঠন
    • সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সংগঠন অবকাঠামো
    • সাংগঠনিক স্তর
    • কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ
    • কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • অঞ্চল
    • মহানগরী
    • জেলা
    • উপজেলা
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • কার্যক্রম
    • বিভাগীয় কার্যক্রম
      • ট্রেড ইউনিয়ন
      • শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
      • সাহায্য ও পুনর্বাসন
      • সংস্কৃতি
      • শ্রমিক সেবা
      • সমাজকল্যাণ
      • সংগঠন ও রাজনীতি
      • স্বাস্থ্যসেবা
      • আইন ও মানবাধিকার
      • পরিবেশ ও কৃষিউন্নয়ন
      • যুব ও ক্রীড়া
      • আন্তর্জাতিক
    • সেক্টর ভিত্তিক কার্যক্রম
      • পরিবহন
      • গার্মেন্টস
      • কৃষি
      • রিক্সা ভ্যান
      • নৌ-পরিবহন
      • স্থল বন্দর
      • চাতাল
      • দর্জি
      • নির্মাণ শ্রমিক
  • প্রকাশনা
    • বই
    • সাময়িকী
    • পোস্টার
    • স্টিকার
    • লিফলেট
    • নববর্ষ
    • স্মারক
    • স্মরণিকা
    • বিজ্ঞাপন
  • গ্যালারি
    • ছবি
    • ভিডিও
  • সংবাদ
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • চলতি বিষয়
  • আর্কাইভ
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • লাইব্রেরী
  • যোগাযোগ
  • হোম
  • সংগঠন
    • সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সংগঠন অবকাঠামো
    • সাংগঠনিক স্তর
    • কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ
    • কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • অঞ্চল
    • মহানগরী
    • জেলা
    • উপজেলা
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • কার্যক্রম
    • বিভাগীয় কার্যক্রম
      • ট্রেড ইউনিয়ন
      • শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
      • সাহায্য ও পুনর্বাসন
      • সংস্কৃতি
      • শ্রমিক সেবা
      • সমাজকল্যাণ
      • সংগঠন ও রাজনীতি
      • স্বাস্থ্যসেবা
      • আইন ও মানবাধিকার
      • পরিবেশ ও কৃষিউন্নয়ন
      • যুব ও ক্রীড়া
      • আন্তর্জাতিক
    • সেক্টর ভিত্তিক কার্যক্রম
      • পরিবহন
      • গার্মেন্টস
      • কৃষি
      • রিক্সা ভ্যান
      • নৌ-পরিবহন
      • স্থল বন্দর
      • চাতাল
      • দর্জি
      • নির্মাণ শ্রমিক
  • প্রকাশনা
    • বই
    • সাময়িকী
    • পোস্টার
    • স্টিকার
    • লিফলেট
    • নববর্ষ
    • স্মারক
    • স্মরণিকা
    • বিজ্ঞাপন
  • গ্যালারি
    • ছবি
    • ভিডিও
  • সংবাদ
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • চলতি বিষয়
  • আর্কাইভ
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • লাইব্রেরী
  • যোগাযোগ
No Result
View All Result
বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন

শ্রমিকের দায়িত্ব

মাওলানা আবুল হাসেম মোল্লা

ডিসেম্বর ৮, ২০২২
শ্রমিকের দায়িত্ব
Share on FacebookShare on Twitter

ইসলাম আল্লাহ তায়ালা প্রদত্ত জীবন ঘনিষ্ঠ ভারসাম্যপূর্ণ এক জীবন বিধান। মানব জীবনের যতগুলো দিক ও বিভাগ রয়েছে সব বিষয়েই রয়েছে ইসলামী অনন্য সৌন্দর্যের ছোঁয়া। এক কথায় বলতে গেলে পারস্পরিক অধিকার ও কর্তব্যের সমন্বিত রূপই হলো ইসলাম। কিন্তু আমরা যারা ইসলামকে নিজের চূড়ান্ত জীবন দর্শন হিসেবে ঘোষণা করেছি, আমরাও নিজেদের অধিকারের ব্যাপারে যতটা সরব ও সোচ্চার; দায়িত্বানুভূতি সম্পর্কে ততটা সচেতন নই। অথচ আমরা প্রত্যেকেই যদি স্ব স্ব অবস্থান থেকে কর্তব্যের ব্যাপারে যত্মবান হই, তবেই সামাজিক স্থিতিশীলতা, পারস্পরিক সম্মানবোধ, রাষ্ট্রীয় নিয়ম শৃঙ্খলাসহ ইনসাফপূর্ণ এক কাঙ্ক্ষিত পরিবেশের দেখা মিলবে। সাধারণত শ্রমিকের অধিকার নিয়ে যে পরিমাণ আলোচনা-পর্যালোচনা, বৈঠক, সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়, প্রবন্ধ-নিবন্ধ লিখিত হয়, দাবি দাওয়া উত্থাপিত হয়; সে তুলনায় শ্রমিকের দায়িত্ব কর্তব্য সংক্রান্ত আলোচনা নেহায়েতই কম হয়। ফলে নিম্মে আমরা ভারসাম্যপূর্ণ জীবন বিধান ইসলামের আলোকে শ্রমিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে জানতে প্রয়াস পাব।

প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল: প্রতিটি প্রাপ্ত বয়স্ক বিবেক সম্পন্ন মানুষই দায়িত্বশীল। দায়িত্বের বাঁধন মুক্ত হয়ে লাগামহীন উটের মতো হেয়ালীপূর্ণ জীবন পরিচালনার অধিকার কোন মানুষেরই নেই। আশরাফুল মাখলুকাত তথা সৃষ্টির সেরা মানুষকে আল্লাহ তায়ালা উদ্দেশ্যহীন খেলাচ্ছলে সৃষ্টি করেননি। সুতরাং মানুষ বলতে যা বুঝায় পুরুষ কিংবা নারী, ধনী হোক অথবা গরিব, শিক্ষক বা ছাত্র, মালিক হোক অথবা শ্রমিক সবাই যার যার পরিসরে পূর্ণ মাত্রায় দায়িত্বশীল। তারই ধারাবাহিকতায় গায়ে গতরে খেটে খাওয়া একজন শ্রমিকও তার কর্মক্ষেত্রে দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিতে হবে। সময়ের সাথে সময়ের কাজ সম্পন্ন করণ, অযত্ম অবহেলায় খামখেয়ালী না করে প্রতিটি সম্পদের সংরক্ষণ করা; এগুলো শ্রমিকেরই দায়িত্বের অংশ। মানুষের অধিকার ও কর্তব্যের মাঝে ভারসাম্য প্রতিষ্ঠায় অনবদ্য সংগ্রামী ব্যক্তিত্ব মুহাম্মাদ (সা.) তাই তো দায়িত্বশীলতার ব্যাপারে পরিষ্কার বলেছেন, “তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যকেই অধীনদের (দায়িত্ব) সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। ইমাম একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি, তাঁকে তাঁর অধীনদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। পুরুষ তার পরিবারবর্গের অভিভাবক, তাকে তার অধীনদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। নারী তার স্বামী-গৃহের কর্তী, তাকে তার অধীনদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। খাদিম তার মনিবের ধন-সম্পদের রক্ষক, তাকেও তার মনিবের ধন-সম্পদ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। ইবনু উমার (রা.) বলেন, আমার মনে হয়, রাসুলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরও বলেছেন, পুত্র তার পিতার ধন-সম্পদের রক্ষক এবং এগুলো সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞেস করা হবে। তোমরা সবাই দায়িত্বশীল এবং সবাইকে তাদের অর্পিত দায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন করা হবে। (বুখারী-৮৯৩)।

শারীরিক দক্ষতা: আল্লাহ তায়ালা মানুষকে নানা বৈচিত্র্যে সৃষ্টি করেছেন। কোন মানুষই স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়। প্রত্যেকেই কোন না কোন ভাবে অপরের উপর নির্ভরশীল। কেউ মেধা শক্তিতে অত্যন্ত তীক্ষ্ম হলেও কায়িক পরিশ্রমে একবারেই দুর্বল। আবার কেউ কায়িক পরিশ্রমে যথেষ্ট পারঙ্গম হলেও মেধায় হয়তো ততটা সবল নয়। ফলে সবাই যার যার সক্ষমতা ও সীমাবদ্ধতার আলোকে নিজ নিজ কর্ম বেছে নেয়। অন্য সকল কর্মক্ষেত্রে শারীরিক সক্ষমতা খুব বেশি জরুরি না হলেও শ্রমিক হিসেবে যারা কর্মজীবন অতিবাহিত করেন, তাদের কর্তব্য হলো, তাদের শরীরের সক্ষমতার আলোকে মালিকের সাথে কর্মচুক্তিতে আবদ্ধ হওয়া। অন্যথায় নিজের দুর্বলতা সত্ত্বেও যেনতেন ভাবে কাজের দায়িত্ব গ্রহণ করে অতঃপর সময় ক্ষেপণ করে মালিককে বিব্রত করা কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তা অনেকটাই দায়িত্বহীনতা ও ধোঁকাবাজির নামান্তর। আমরা দেখতে পাই, নবী শুয়াইব (আ.) যখন তাঁর হবু শ্বশুরের সাথে কর্মচুক্তিতে আবদ্ধ হচ্ছিলেন তখন পরিষ্কারভাবে শ্রমিকের শারীরিক দক্ষতার ব্যাপারটি আল্লাহ তায়ালা পবিত্র কুরআনে তুলে ধরেছেন। কুরআনের বাণী, “মেয়ে দুজনের একজন তার পিতাকে বলল, বাবা! একে চাকরিতে নিয়োগ করো, কর্মচারী হিসেবে সে ব্যক্তিই উত্তম হতে পারে যে বলশালী ও আমানতদার।” (সুরা কাসাস: ২৬)।

আমানতদারীতা: আমানতদারিতা একজন মুমিনের অনিবার্য গুণ। এর খেয়ানত করা মুনাফিকের আলামত। আমরা পূর্বেই অবগত হয়েছি প্রতিটি মানুষই তার কর্মের ব্যাপারে জবাবদিহি করতে হবে। তাই আমানত রক্ষা করা অন্য সকল শ্রেণি পেশার মতো একজন শ্রমিকেরও মৌলিক দায়িত্ব ও কর্তব্য। মালিকের সাথে দৈনিক যত ঘণ্টার কাজের চুক্তি হয়েছে তা যথাযথভাবে পালন করা, মালিকের সরবরাহকৃত যন্ত্রাদির যত্ম করা, অসৎউদ্দেশ্যে প্রয়োজনের চেয়ে বেশি মালামালের চাহিদা পেশ না করা, কাজের অতিরিক্ত বেঁচে যাওয়া মালামালের হিসাব মালিককে যথাযথভাবে বুঝিয়ে দেওয়া, এ সবই আমানতদারিতার অন্তর্ভুক্ত। আমরা জানি, শ্রমিকগণ আল্লাহ তায়ালার বন্ধু। কিন্তু যে শ্রমিক আমানতদারিতার খেয়ানত করবে, সে কেয়ামাতের দিন আল্লাহ তায়ালার বন্ধু হিসেবে সম্মানিত না হয়ে বরং প্রতারক হিসেবে চিহ্নিত হবে। আর কুরআনের বক্তব্য তো জানলাম, “কর্মচারী হিসেবে সে ব্যক্তিই উত্তম হতে পারে যে বলশালী ও আমানতদার।” (সুরা কাসাস: ২৬)।

মুতাফফিফীনের অর্ন্তভুক্ত না হওয়া: মুতাফফিফীনের হওয়া খুবই মন্দ বৈশিষ্ট্য। এদের জন্য রয়েছে পরকালে মহাদুর্ভোগ। তারা হলো এমন বৈশিষ্ট্যের অধিকারী যারা নিজেদের অধিকার, পাওনা পূর্ণ মাত্রায় আদায় করে নেয়, কিন্তু অপরের প্রাপ্য যথাযথ আদায় করে না। সাধারণত শ্রমিকের অধিকার আদায়ে যে পরিমাণ সামাজিক উচ্চবাচ্য হয়, সম পরিমাণে শ্রমিক তার ন্যায্য দায়িত্ব আদায় করছে কিনা? তাও গভীর পর্যালোচনার বিষয়। সে জন্য একজন শ্রমিকেরও কর্তব্য হলো এমন মন্দ আচরণ থেকে আত্মরক্ষা করা। আখেরাতে প্রকৃত বিশ্বাসী কোন মানুষ এমন হতে পারে না, এমন হওয়া গ্রহণযোগ্য নয়, চাই সে মালিক হোক কিংবা শ্রমিক হোক। কুরআনের বাণী, “ধ্বংস তাদের জন্যে যারা মুতাফফিফীন, তাদের অবস্থা এই যে, লোকদের থেকে নেবার সময় পুরোমাত্রায় নেয়, এবং তাদেরকে ওজন করে বা মেপে দেওয়ার সময় কম করে দেয়। এরা কি চিন্তা করে না, এদেরকে উঠিয়ে আনা হবে? একটি মহাদিবসে।” (সুরা মুতাফফিফীন: ১-৫)।

চুক্তি পূর্ণ করা: মানুষ সামাজিক জীব। একজন অপরের সাথে গভীরভাবে দায়বদ্ধ। সামাজিক কারণে একে অপর থেকে সেবা নিতে হয়। পারস্পরিক এ সেবা দেওয়া নেওয়ার মধ্যে রয়েছে এক জাতীয় সামাজিক চুক্তি। চাই সে চুক্তি অলিখিত হোক, তাও কিন্তু চুক্তি/ওয়াদা হিসেবেই গণ্য হয়ে থাকে। অতএব দায়িত্ববান সত্তা হিসেবে একজন শ্রমিকের অন্যতম কর্তব্য হলো, তার কৃত চুক্তি যথাযথ পরিপালন করা। কেননা তা লঙ্ঘন করা ইসলামী শরীয়াতের দৃষ্টিতে গর্হিত অপরাধ। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “আর তোমরা প্রতিশ্রুতি পালন করো, অবশ্যই প্রতিশ্রুতির ব্যাপারে তোমাদের জবাবদিহি করতে হবে।” (সুরা বনী ইসরাইল: ৩৪)।

মালিকের কল্যাণকামিতা: মালিক শ্রমিক পরস্পর দুটি পক্ষ। উভয়েরই উভয়ের প্রতি দায়বদ্ধতা রয়েছে। পরস্পর পরস্পরকে প্রতিদ্ব›দ্বী ভাবা যেতে পারে না। বরং একে অপরের সহযোগী। পারস্পরিক সহযোগিতার মনোভাবের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে সমাজের প্রকৃত স্থিতিশীলতা ও উন্নতি। যে সমাজ মালিক শ্রমিকের পরস্পর দ্ব›দ্ব লাগিয়ে তৃপ্তি অনুভব করে সে সমাজ মনুষ্য সমাজ হতে পারে না। ইসলাম আল্লাহ তায়ালার মনোনীত অনিন্দ্য সুন্দর জীবন ব্যবস্থা হিসেবে একে হাদিসে “আদ দীনু আন নাসীহাহ” অর্থ্যাৎ ‘দীন হলো কল্যাণকামিতা’ এ অভিধায় অভিহিত করা হয়েছে। অতএব একজন শ্রমিকের দায়িত্ব ও কর্তব্য হলো মালিকের কল্যাণ কামনা করা। কিভাবে কাজ করলে মালিকের সমৃদ্ধি হবে তা চিন্তা ভাবনা করা একজন মুমিন শ্রমিকের ঈমানী দায়িত্বও বটে।

সাওয়াবের প্রত্যাশায় পরিশ্রম করণ: মুমিনের কোন তৎপরতাই আল্লাহ তায়ালার দৃষ্টির বাহিরে নয়। আহকামুল হাকিমীন মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাহর কোন কাজকেই অবহেলা করেন না। তা যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন। একটা মাছি সমান সৎকর্মও যদি কোন বান্দার যথাযথ নিয়মে সম্পাদিত হয়, আল্লাহ তায়ালা তাকে সে পুরস্কার দিতেও কার্পণ্য করবেন না, সুবহানাল্লাহ। সুতরাং একজন শ্রমিক কাজ করে শুধু দুনিয়াতেই পারিশ্রমিক পাবেন তাই নয়, বরং আখেরাতেও সে উন্নত মর্যাদার অধিকারী হবে, ইনশাআল্লাহ। অতএব একজন শ্রমিকের উচিত পরকালীন সাওয়াবেরও আশায় শ্রম ব্যয় করা। হাদিসের বাণী, “তিন ধরনের লোকের জন্যে দুটি পুণ্য রয়েছে, তার মধ্যে এক শ্রেণি হলো, যে বান্দা আল্লাহর হক আদায় করে এবং তার মালিকেরও হক আদায় করে।” (বুখারী-৯৭)।

মিথ্যার আশ্রয় না নেওয়া: মিথ্যা ভয়ংকর কবীরা গুণাহসমূহের একটি। মিথ্যাকে বলা হয় সকল পাপের মূল। যে নিজে মিথ্যা বলা ও মিথ্যা কর্মে অভ্যস্ত, তার সাথেও যদি কেউ মিথ্যা বলে তাও সহ্য করতে পারে না। মিথ্যাবাদীর জন্য জাহান্নামের অবধারিত শাস্তি তো আছেই, তদুপরি দুনিয়াতেও সে লাঞ্চিত ও অপমানিত হয়, ঘৃণিত হয়। সবার ধিক্কার তার প্রতি বর্ষিত হয়। বলা হয়ে থাকে “কাউকে মিথ্যা বলে হাসানোর চেয়ে সত্য বলে কাঁদানো অনেক ভালো।” সে জন্য একজন প্রকৃত মুমিন কখনো মিথ্যার আশ্রয় নিতে পারে না। একজন শ্রমিকের জন্যও তাই মিথ্যার আশ্রয় না নেওয়া উচিত। শ্রমিকের যতটুকু সুযোগ আছে নির্ধারিত বিনিময়ে মালিককে ততটুকু সেবা দিবে। রং চং লাগিয়ে সাময়িকভাবে মালিককে প্রতারিত করতে সক্ষম হলেও ভবিষ্যতে এ শ্রমিককে মালিক কোনভাবেই বিশ্বাস করবে না। ফলে নিজেদের মধ্যেই তিক্ততা শুরু হবে, আর পরকালের শাস্তি তো আরও সর্বনাশা ও ভয়ংকর হবে।

ইহসান করা: ইহসান তথা সদাচার ইসলামী জীবন বিধানের অতি উচ্চ মানের একটা গুণ। ইহসান বলা হয়, কর্মকে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে সম্পন্ন করা, কাউকে তার প্রাপ্যের চেয়েও বেশি প্রদান করা। আল্লাহ তায়ালা ইহসানকারীদেরকে অত্যাধিক পছন্দ করেন। আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, “সদাচারের প্রতিদান সদাচার ছাড়া আর কী হতে পারে?” (সুরা আর রাহমান: ৬০)। একজন শ্রমিকেরও ইহসানের বৈশিষ্ট্যে বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত হওয়ার চেষ্টা করা উচিত। কাঁটায় কাঁটায় অক্ষরে অক্ষরে দায়িত্ব পালন করেই কাট খোট্টার মতো সটকে পড়া ইসলামের কাক্সিক্ষত চাহিদার সাথে খাপ খায় না। কিভাবে একটু বাড়তি আন্তরিকতার সাথে মালিকের প্রতি ইহসান করা যায়, তার চিন্তা করা উচিত। আশা করা যায় এতে করে মালিকও তার শ্রমিকের প্রতি আরও আন্তরিক হওয়ার প্রয়াস পাবে। আর যদি কোন নির্দয় মালিক তার শ্রমিকের পক্ষ থেকে ইহসান পেয়েও অবমূল্যায়ন করে, শ্রমিকের প্রতি ইহসান নাও করে; অবশ্যই তার চেয়েও মহান মালিক সে শ্রমিকের প্রতি মহা ইহসান করবেন, তার প্রাপ্যের চেয়েও আরও অনেক বেশি দিবেন, ইনশাআল্লাহ।

মালিককে সম্মান করা: আল্লাহ তায়ালা পৃথিবীকে ভারসাম্যপূর্ণভাবে সাজিয়েছেন। কোথায়, কাকে, কিভাবে, প্রতিষ্ঠিত করবেন এটা আল্লাহ তায়ালার অসীম হেকমতের অংশ। মানুষের পক্ষে তার গুঢ় রহস্য ভেদ করা সম্ভব নয়। আল্লাহ তায়ালা কাউকে মালিক বানিয়ে পরীক্ষা করছেন, আবার কাউকে শ্রমিক বানিয়ে পরীক্ষা করছেন। এ সবই মহান মালিকের দীর্ঘ মেয়াদি পরীক্ষার ক্ষুদ্র অংশ মাত্র। যদিও কে মালিক আর কে শ্রমিক আল্লাহ তায়ালার কাছে চূড়ান্ত বিচারে তা সম্মানের মানদণ্ড নয়, আল্লাহ তায়ালাকে কে কতটুকু ভয় করে, কতটুকু মেনে চলে তা-ই প্রকৃত মানদণ্ড। তথাপিও আল্লাহ তায়ালা আপাতত সামাজিক বিচারে, পরীক্ষার অংশ হিসেবে শ্রমিকের চেয়ে মালিককে একটু বেশি সম্মানিত করেছেন। অতএব একজন শ্রমিকের দায়িত্ব হলো মালিকের প্রতি শ্রদ্ধা রাখা, তার প্রতি অযথা অবজ্ঞা প্রদর্শন না করা। রাসুল (সা.) বলেছেন, “তোমরা মানুষের সঙ্গে তাদের মর্যাদা অনুযায়ী আচরণ করো।” (আবু দাউদ: ৪৮৪২) তবে প্রসঙ্গত জেনে রাখা ভালো, কোন মালিক যদি তার শ্রমিকের উপর জুলুম করে, অবশ্যই সে শ্রমিকের হক দাবি করার জোর অধিকার রয়েছে। রাসুল (সা.) বলেছেন, “নিশ্চয়ই হকদারের (কড়া) কথা বলার অধিকার রয়েছে।” (বুখারী-২৩০৬)।

প্রবন্ধে শ্রমিকের দায়িত্ব কর্তব্য নিয়ে আলোচনা প্রাধান্য পেলেও, শ্রমিকের অধিকার নিয়েও আমাদের সচেতন হওয়া অবশ্যই কর্তব্য। আল্লাহ তায়ালা মালিক শ্রমিক উভয় পক্ষকেই দায়িত্ব কর্তব্য পালনে আন্তরিক হওয়ার তাওফীক দান করুন। আমিন।

লেখক: ইসলামী চিন্তাবিদ

সর্বশেষ সংযোজন

শ্রমিক নেতা গোলাম মর্তুজা-এর ইন্তিকালে শ্রমিক কল্যাণের শোকবার্তা

শ্রমিক নেতা গোলাম মর্তুজা-এর ইন্তিকালে শ্রমিক কল্যাণের শোকবার্তা

মে ২১, ২০২৩

বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের রাজশাহী মহানগরীর ট্রেড ইউনিয়ন সম্পাদক গোলাম মর্তুজা (৫৭) আজ ভোর ৫ টায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন...

স্বাধীনতার আলো বিকিরণ করুক মোদের আঙিনায়

স্বাধীনতার আলো বিকিরণ করুক মোদের আঙিনায়

মে ১৭, ২০২৩

স্বাধীনতা জীবনের অন্যতম অনুসঙ্গ। মুক্ত বিহঙ্গে ডানা মেলে ওড়া হরিয়ালকে খাঁচায় বন্দি রেখে পৃথিবীর সবচেয়ে বিশাল অট্টালিকায় রাখলেও সে তার...

মুমিনের দৈনন্দিন জীবন

মুমিনের দৈনন্দিন জীবন

মে ১০, ২০২৩

একজন মুমিন কিভাবে দৈনন্দিন জীবন-যাপন করবে, তা শিখতে হবে আল্লাহর রাসুলের আদর্শ থেকে। কেননা তিনি আমাদেরকে জীবন-যাপনের মৌলিক সব কিছুই...

সিয়াম সাধনা মালিক ও শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ: করণীয়

সিয়াম সাধনা মালিক ও শ্রমজীবী সাধারণ মানুষ: করণীয়

মে ১০, ২০২৩

রামাদান, সিয়াম সাধনা ও কুরআন মাজিদ একে অন্যের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সিয়াম বা রোজা হচ্ছে আল্লাহর হুকুম এবং অন্যতম মৌলিক...

বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের ঈদ আনন্দ ও বাস্তবতা

বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের ঈদ আনন্দ ও বাস্তবতা

মে ১০, ২০২৩

ঈদের খুশি মানেই অন্যরকম আনন্দ। অন্যরকম এক ঢেউ। এই ঢেউয়ে সকল মানুষের মনই সিক্ত হতে চায়। সকলেই চায় ঈদফুলের নির্মল...

যোগাযোগ:

৪৩৫, এলিফ্যান্ট রোড, বড় মগবাজার
ঢাকা-১২১৭, বাংলাদেশ।
ফোনঃ ৮৩৫৮১৭৭, ৯৩৩১৫৮১/২৫

অন্যান্য লিংকসমূহ:

© 2019, Bangladesh Sramik Kalyan Federation

No Result
View All Result
  • হোম
  • সংগঠন
    • সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
    • লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য
    • কর্মসূচি
    • গঠনতন্ত্র
    • সাবেক সভাপতিবৃন্দ
    • সাবেক সাধারণ সম্পাদকবৃন্দ
  • সংগঠন অবকাঠামো
    • সাংগঠনিক স্তর
    • কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ
    • কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী পরিষদ
    • অঞ্চল
    • মহানগরী
    • জেলা
    • উপজেলা
  • ট্রেড ইউনিয়ন
    • জাতীয় ইউনিয়ন
    • ক্রাফট ফেডারেশন
    • বেসিক ইউনিয়ন
  • কার্যক্রম
    • বিভাগীয় কার্যক্রম
      • ট্রেড ইউনিয়ন
      • শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ
      • সাহায্য ও পুনর্বাসন
      • সংস্কৃতি
      • শ্রমিক সেবা
      • সমাজকল্যাণ
      • সংগঠন ও রাজনীতি
      • স্বাস্থ্যসেবা
      • আইন ও মানবাধিকার
      • পরিবেশ ও কৃষিউন্নয়ন
      • যুব ও ক্রীড়া
      • আন্তর্জাতিক
    • সেক্টর ভিত্তিক কার্যক্রম
      • পরিবহন
      • গার্মেন্টস
      • কৃষি
      • রিক্সা ভ্যান
      • নৌ-পরিবহন
      • স্থল বন্দর
      • চাতাল
      • দর্জি
      • নির্মাণ শ্রমিক
  • প্রকাশনা
    • বই
    • সাময়িকী
    • পোস্টার
    • স্টিকার
    • লিফলেট
    • নববর্ষ
    • স্মারক
    • স্মরণিকা
    • বিজ্ঞাপন
  • গ্যালারি
    • ছবি
    • ভিডিও
  • সংবাদ
    • বিবৃতি
    • শোকবার্তা
    • সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
    • চলতি বিষয়
  • আর্কাইভ
    • প্রবন্ধ/নিবন্ধ
    • কুরআনের শিক্ষা
    • হাদিসের শিক্ষা
    • লাইব্রেরী
  • যোগাযোগ

© 2019 Bangladesh Sramik Kalyan Federation