বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, দুর্যোগ কবলিত মানুষদের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণের চেয়েও তাদের পুর্নবাসন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা গুরুত্বপূর্ণ। দুর্যোগ কবলিত শ্রমজীবীদের পুর্নবাসন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা রাষ্ট্রের নৈতিক দায়িত্ব। এটি রাষ্ট্রকেই বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিনি আজ বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় পুর্নবাসন প্রকল্পের অংশ হিসেবে সুনামগঞ্জ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা দুর্গত শ্রমজীবীদের জন্য গৃহ নিমার্ণের পর উদ্বোধন কালে এসব কথা বলেন। এই সময় তিনি শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের জন্য সেলাই মেশিন বিতরণ, বসত ঘর সংস্কারের জন্য টিন বিতরণ, দুর্গতদের মাঝে রান্না করা খাবার বিতরণসহ বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন। এসময় রিকশা শ্রমিকদের নিয়ে শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। ফেডারেশনের জেলা সভাপতি শাহ আলম সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক লুৎফর রহমান দুলাল এর সঞ্চালনায় এতে আরও উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মুজিবুর রহমান ভূইয়া, সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সোহেল আহমাদ, সিলেট অঞ্চলের সহকারী পরিচালক ফারুক আহমাদ, সিলেট মহানগর সভাপতি জামিল আহমদ রাজু, সিলেট জেলা দক্ষিণের সভাপতি ফখরুল ইসলাম খান, সুনামগঞ্জ জেলা সহ-সভাপতি রেজাউল করিম, কোষাধ্যক্ষ ওয়াশিদ আলী প্রমুখ।
অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেন, দুর্যোগকালীন সময়ে মানুষ যতটা সংকটে থাকে তারচেয়ে বেশি সংকটে পড়ে দুর্যোগ শেষে। দুর্যোগকালীন সময়ে অনেকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেও দুর্যোগ শেষে কেউ খবর নেয় না। অথচ দুর্যোগ শেষে দুর্গত মানুষদের বিপদ আরও বাড়ে। তাদের ঘর-বাড়ি সংস্কার করতে হয়। ফসল হারিয়ে অর্থ উপার্জনের পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। এই সময় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা না করতে পেরে এসব শ্রমিকরা অনাহারে-অর্ধহারে জীবন অতিবাহিত করে। তাই দুর্যোগে যেমন সহযোগিতা করতে হবে ঠিক তেমনিভাবে দুর্যোগ পরবর্তী সংকট মোকাবিলায় সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড়ো ভূমিকা রাখার কথা যারা রাষ্ট্র ক্ষমতায় আছে তাদের। কিন্তু আমাদের দুর্ভাগ্য রাষ্ট্রে যারা ক্ষমতায় আছে তারা জনবান্ধব না। তাই শ্রমিকসহ নিম্ম আয়ের মানুষের হাহাকার তাদের কর্ণকুহরে পৌঁছায় না। আমি আপনাদেরকে এমন আন্দোলনের পথে আসার আহ্বান জানাচ্ছি যে আন্দোলনের নেতারা ধনী-গরিবসহ সকল মানুষের কল্যাণের নিমিত্তে কাজ করবে। এমন আন্দোলন হচ্ছে ইসলামী শ্রমনীতির আন্দোলন। তাই আসুন এই আন্দোলনে শরিক হয়ে দেশে সত্যিকারের কল্যাণকামী সরকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে জোরদার করি।
এছাড়া দেশের নিম্মোক্ত স্থানে পুর্নবাসন প্রকল্পের কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে
নীলফামারী: কেন্দ্রীয় পুর্নবাসন প্রকল্পের অংশ হিসেবে নীলফামারী উপজেলার ডিমলা উপজেলায় বন্যা দুর্গত শ্রমজীবীদের মাঝে বসতঘর সংস্কারের জন্য ঢেউ টিনসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলানম রব্বানী ও সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দুর্গত মানুষের কাছে এসব সামগ্রী পৌঁছে দেন। এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের জেলা সভাপতি মনিরুজ্জামান জুয়েল, ডিমলা উপজেলার সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান, উপজেলার উপদেষ্টা মহিউর রহমান, ফেডারেশনের জেলা সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম প্রমুখ।
গাইবান্ধা: কেন্দ্রীয় পুর্নবাসন প্রকল্পের অংশ হিসেবে গাইবান্ধা জেলার সদর ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলার ৩৫টি পরিবারের মাঝে কর্মসংস্থানের জন্য ছাগল, গরু ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। বসতঘর সংস্কারের জন্য ঢেউ টিনসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি মনসুর রহমান ও সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর হোসাইন ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দুর্গত মানুষের কাছে এসব সামগ্রী পৌঁছে দেন। এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের জেলার প্রধান উপদেষ্টা আব্দুল করিম, সুন্দরগঞ্জ উপজেলার সাবেক চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাজেদুর রহমান, ফেডারেশনের জেলা সভাপতি নুরুন্নবী প্রধান প্রমুখ।
লালমনিরহাট: কেন্দ্রীয় পুর্নবাসন প্রকল্পের অংশ হিসেবে লালমনিরহাট জেলার বিভিন্ন উপজেলায় বন্যা দুর্গত শ্রমজীবীদের মাঝে কর্মসংস্থানের জন্য সেলাই মেশিন ও নগদ অর্থ প্রদান করা হয়েছে। বসতঘর সংস্কারের জন্য ঢেউ টিনসহ অন্যান্য সামগ্রী বিতরণ করা হয়।
কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি গোলাম রব্বানী ও সহ-সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম ফেডারেশনের পক্ষ থেকে দুর্গত মানুষের কাছে এসব সামগ্রী পৌঁছে দেন। এই সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের জেলা সভাপতি রেনায়াউল আলম প্রমুখ।