বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান দেশে ও প্রবাসে অবস্থানরত সর্বস্তরের শ্রমজীবী ভাই-বোনসহ দেশবাসীকে পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। আজ এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, মাসব্যাপী সিয়াম সাধনা ও আত্ম সংযমের পালনের পর অপার খুশি ও আনন্দের বার্তা নিয়ে পবিত্র ঈদুল ফিতর আমাদের কাছে সমাগত। হিংসা-বিদ্বেষ, হানাহানি ভুলে গিয়ে মানুষের মাঝে সৌহার্দ, সম্প্রীতি ও ঐক্যের আহ্বান নিয়ে আমাদের কাছে আসে পবিত্র ঈদুল ফিতর।
নেতৃবৃন্দ বলেন, পবিত্র কুরআন নাজিলের মাস আমাদের নিকট থেকে বিদায় নিচ্ছে। রমজান মাস তাকওয়ার গুণাবলী সৃষ্টির মাধ্যমে ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় স্তর সহ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান মেনে চলার প্রশিক্ষণ দেয়। আল্লাহর দেওয়া বিধি-বিধান মেনে চলার মধ্যে নিহিত রয়েছে সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণ। পৃথিবীব্যাপী চলা জুলুম-নির্যাতনের মূলোৎপাটন করতে হলে আল্লাহর বিধান কায়েমের বিকল্প নেই। এটিই একমাত্র সত্য ও সুন্দরের পথ। আমাদের সকলকে রমজানের প্রদত্ত শিক্ষা কাজে লাগিয়ে আল্লাহর বিধান কায়েমের আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, প্রায় দুই বৎসর যাবত চলছে নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ। করোনা ভাইরাসের নতুন নতুন ভ্যারিয়েশন আমাদের পাশর্^বর্তী দেশ পর্যদুস্ত। তাই সর্তকর্তার অংশ হিসেবে আমাদের দেশেও একমাসের বেশী সময় ধরে লকডাউন চলছে। দেশের প্রায় সাড়ে ৭ কোটি মানুষ শ্রমজীবী। লকডাউনের কারণে কর্ম হারিয়ে অসহায় অবস্থায় দিনযাপন করছে এই সকল মানুষ। বিশেষত যারা দিন মজুর, দিনে এনে দিনে খায় তাদের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। কর্মহীন মানুষগুলো পরিবার পরিজন নিয়ে নিদারুণ কষ্টে আছে। এই পরিবার গুলে তে নিত্য দিনের খাদ্য সামগ্রীর চরম সংকট চলছে। সন্তান-সন্তুতিদেরকে ঈদের জন্য একটি নতুন জামা কিনে দিবে সেই সামর্থ্য আজ তাদের নেই। ঈদের আনন্দ থেকে এই সকল পরিবার যেন বঞ্চিত থেকে যাচ্ছে। এই অসহায়-দুস্থ মানুষের সাহায্যার্তে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার জন্য আমরা উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি।
নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে গামেন্টর্স সেক্টরসহ দেশের বিভিন্ন কল-কারখানায় অসংখ্য শ্রমজীবী ভাই-বোনেরা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। এই সকল শ্রমজীবীদের এই কঠিন সময়ের শ্রমের যথাযথ মূল্যায়ন করার জন্য কর্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানাচ্ছি। রমজানের শুরু থেকে আমরা বলে আসছি প্রতিটি শ্রমিকের বকেয়া বেতনসহ ঈদ উৎসবের ভাতা ২০ রমজানের পূর্বে পরিশোধ করতে। অনেক মালিক ভাইয়েরা ইতিমধ্যে পরিশোধ করেছেন। এখনো যারা পরিশোধ করেননি সেই মালিক ভাইদের প্রতি অনুরোধ পবিত্র ঈদুল ফিতরের পূর্বে শ্রমিকের বকেয়া বেতন ও বোনাস পরিশোধ করুন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, গতবারের ন্যায় এইবারও আমাদের ভিন্ন প্রেক্ষাপটে ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে হচ্ছে। ঈদুল ফিতরের আনন্দ উৎসব থেকে সমাজের একটি শ্রমজীবী পরিবার যেন বঞ্চিত না থাকে সে ব্যাপারে আমাদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। যে সকল শ্রমজীবী কর্মহীন তাদের পরিবারের সাহায্যের জন্য আমাদের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। মনে রাখতে হবে ঈদুল ফিতর মানুষে মানুষে ভেদাভেদ নয়, সৌহার্দ, সম্প্রীতি ও ঐক্যের মেলবন্ধন গড়ে তুলে। সুতরাং নিরন্ন ও ঈদ বন্ত্রহীন মানুষের সাহায্যে এগিয়ে এসে তাদের সাথে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে নিতে হবে।
পরিশেষে নেতৃবৃন্দ, শ্রমজীবী মানুষসহ দেশবাসীর কল্যাণ, সুখ-শান্তি ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করে আল্লাহ রাব্বুল নিকট দোয়া করেন। মহামারি নভেল করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ মুক্তি পাওয়ার জন্য আল্লাহর সাহায্য চান। সর্বোপরি পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দ বার্তা নিয়ে প্রতিটি অসহায় দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়নোর জন্য আবারো সমাজের বিত্তবানদের প্রতি বিনিত নিবেদন করেন।