বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় প্রধান উপদেষ্টা ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন পরিবহন সেক্টরের সর্বক্ষেত্রে বিশৃঙ্খল, অনিয়ম, জুলুম থেকে মুক্তি এবং সর্বোপরি আখেরাতের জবাবদিহিতার অনূভুতি থেকে সেক্টর দায়িত্বশীলদের সেবা ও অভিভাবকত্বের দায়িত্ব নিয়ে পরিবহন শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে হবে। গতকাল বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে পরিবহন সেক্টরের সাথে সম্পৃক্ত সারাদেশের দায়িত্বশীলদের নিয়ে এক ভার্চুয়াল সেক্টর দায়িত্বশীল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ- সভাপতি ও বাংলাদেশ রিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খানের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও পরিবহন সেক্টরের সভাপতি কবির আহমদের পরিচালনায় কর্মশালায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমান ও বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর ড. মাওলানা আব্দুস সামাদ।
অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ- সভাপতি ও নৌ-পরিবহন শ্রমিক সেক্টরের সভাপতি লস্কর মো: তসলিম,কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ স্থল বন্দর শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মজিবুর রহমান ভূঁইয়া, বাংলাদেশ রেলওয়ে এমপ্লয়ীজ লীগের সভাপতি আক্তারুজ্জামান ও বাংলাদেশ রিক্শা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মহিব্বুল্লাহ প্রমুখ।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে আরো বলেন, সমাজের একশ্রেণীর ধূর্ত ও মতলববাজ ব্যক্তিরা নেতৃত্বের আসনে বসে যুগ যুগ ধরে দরদি বন্ধুর চাদর গায়ে দিয়ে এই অসহায় সরলমনা শ্রমিকদের শোষণ করে আসছে।কার্যত: এ শ্রেনীর মানুষগুলো যারা গায়ে-গতরে খাটে, যাদের রক্ত পানি করে ঘাম ঝরে, যারা পরিবার পরিজনের একবেলা খাবার সংগ্রহের জন্য ছুটে বেড়ায় তাদের উপরেই জুলম করে যাচ্ছে। এই শোষণ ও জুলুমের অন্যতম কারণ এরা দুনিয়ামুখী ভোগবাজ,দুনিয়ার ক্ষুদ্র স্বার্থকে বড় করে দেখে এবং আখেরাতকে ভুলে গিয়ে আল্লাহর সামনে জবাবদিহিতার ব্যাপারে বেপরোয়া হয়ে পড়েছে।এই বেপরোয়া শ্রেণীকেই আল্লাহভীরু ও নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে আমাদেরকে নিরলস প্রচেষ্টা চালাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দাবি আদায়ের নামে শ্রমিকদের রাস্তায় নামিয়ে দিয়ে আন্দোলনের সুফল একশ্রেণীর নেতারা ভোগ করছে অথচ শ্রমিকরা এর সুফল ভোগ করতে পারছেনা।ফলে শ্রমিকদের ভাগ্যের কোন উন্নয়ন হয়নি বরং তারা মজলুমই রয়ে গেল। আমাদের দায়িত্ব হবে এই অধিকারহারা মজলুম শ্রমিকদের সুসংগঠিত করে তাদের পাশে দাঁড়ানো।যাতে শ্রমিকরা মনে করে তিনি আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন আমাদের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব পালন করছেন।আর এই কাজ করতে হবে আখেরাতের জবাবদিহিতার অনুভূতি থেকে এবং মহান আল্লাহর সন্তষ্টির জন্য।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন পেশার শ্রমজীবী মানুষদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই একটি সভ্যতা নির্মিত হয়। একটি দেশ উন্নত হয়। কিন্তু সে শ্রমিকরা আজ সর্বক্ষেত্রে নির্যাতিত,নিপীড়িত। এই নির্যাতিত,নিপীড়িত ও অধিকারহারা শ্রমিকদের অধিকার ফিরিয়ে দেয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালানো আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে নৈতিক, সাংগঠনিক ও পেশাগত দক্ষতা সম্পন্ন নেতৃত্বের বিকল্প নেই। তাই পরিবহনসহ সকল সেক্টরে নৈতিক ও সাংগঠনিক দক্ষতা সম্পন্ন অাদর্শভিত্তিক নেতৃত্ব গড়ে তুলতে দায়িত্বশীলদের গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করতে হবে।