বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ.ন.ম. শামসুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ও আর্থসামাজিক উন্নয়নে সিংহভাগ অবদান শ্রমিক মেহনতি মানুষের। দেশের জনশক্তি ও জনসংখ্যার বেশিরভাগও শ্রমিকজনতা। তাই শ্রমিকদের বঞ্চিত করে দেশকে এগিয়ে নেওয়া অসম্ভব। শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার প্রদানের মধ্যেই রয়েছে দেশের ও দশের কল্যাণ। শ্রমিক অধিকার আদায়ের নামে আন্দোলনের নামে বিশৃঙ্খলায় উৎসাহী নই। শ্রমিক অধিকার রক্ষায় মালিক-শ্রমিক সুসম্পর্ক তৈরি করে ট্রেড ইউনিয়নের কাজ এগিয়ে নিতে হবে। বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন চট্টগ্রাম মহানগরীর বার্ষিক দায়িত্বশীল সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম মহানগরী সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের খানের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগরী সাধারণ সস্পাদক এস এম লুৎফর রহমানের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের চট্টগ্রাম মহানগরীর প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি কবির আহমদ, কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য মুহাম্মদ ইসহাক, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা সভাপতি ইউসুফ বিন আবুবক্কর, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা সভাপতি মাওলানা নুরুল হোসাইন, কক্সবাজার জেলা সভাপতি আলমগীর হুসাইন, খাগড়াছড়ি জেলা সভাপতি আব্দুল মন্নান, চট্টগ্রাম মহানগরী সহ-সভাপতি ডা. আব্দুল্লাহ ওয়াছি, কাজী জাহাঙ্গীর হোসাইন,সাইদুর রহমান,মুহাম্মদ এনামুল কবির,মুহাম্মদ সেলিম পাটোয়ারী,আব্দুল কাদের ভুঁইয়া, মকবুল আহমদ সহ মহানগরীর কার্যনির্বাহী কমিঠির সদস্যবৃন্দ,অঞ্চল,থানা ও ট্রেড ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, চট্টগ্রাম হচ্ছে সকল অন্যায়, অনাচার, জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ আন্দোলনের সূতিকাগার। চট্টগ্রাম থেকেই দেশের স্বাধীনতার ঘোষিত হয়েছিল। সুতরাং শ্রমিক আন্দোলনেও চট্টগ্রাম কাঙ্ক্ষিত ভূমিকা পালনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে, ইনশাআল্লাহ। মজবুত সংগঠন গড়ে তোলা, শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে সার্বক্ষণিক পাশে থাকা, অসহায় গরিব মেহনতি মানুষের কাছে সেবা পৌঁছে দেওয়ার মাধ্যমে দায়িত্বশীলদের প্রকৃত শ্রমিকনেতার ভূমিকা পালন করতে হবে। ফেডারেশনের কার্যক্রমকে প্রতিটি শ্রমিকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। দেশ যেহেতু শ্রমিকদের ঘামেই গড়ে ওঠা, সুতরাং দেশের বৃহত্তর স্বার্থে জাতীয় প্রয়োজনেও শ্রমিকদের সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। দেশের সমৃদ্ধি , দুর্নীতি লুটপাট ও অন্যায়ের প্রতিরোধ, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারেও শ্রমিকদের জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা মুহাম্মদ শাহজাহান বলেন, চট্টগ্রামের শ্রমিক নেতৃবৃন্দ নিরলস পরিশ্রমের মাধ্যমে ফেডারেশনকে এগিয়ে নিচ্ছেন। সেই পরিশ্রমকে উদ্যমে পরিণত করতে হবে। ইখলাসের সাথে আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে শ্রমিকদের সেবায় আত্মনিয়োগ করতে হবে। ইনশাআল্লাহ দুনিয়া আখিরাত উভয় জাহানে সেই পরিশ্রমের ফসল আপনারা উত্তমভাবে পাবেন।
বিশেষ অতিথি কবির আহমদ বলেন, শ্রমিক আন্দোলনের প্রাণ হচ্ছে মজবুত সংগঠন ও ট্রেড ইউনিয়ন। তাই সংগঠনের মজবুতি অর্জন ও ট্রেড ইউনিয়ন গঠনে বিশেষ মনোযোগ দিতে হবে। ইসলামী শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে যার যার অবস্থান থেকে আমাদের সর্বোচ্চ সামর্থ্য বিনিয়োগ করতে হবে।
মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের খান সভাপতির বক্তব্যে বলেন, করোনাকালীন সময়ে মৃত্যু বরণ করা ফেডারেশনের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সভাপতি মরহুম এম এ তাহের সহ অন্যান্য সকল নেতৃবৃন্দকে স্মরণ করে তাদের জন্য দুআর আবেদন করেন। উপস্থিত অতিথিবৃন্দ ও নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান। অতিথিদের প্রত্যাশিত লক্ষ্যে চট্টগ্রাম মহানগরী শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনকে ঢেলে সাজানোর প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।