বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, স্বাধীনতার পর থেকে অসংখ্য শ্রমিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা লাভ করা সত্তে¡ও শ্রমিকের কাক্সিক্ষত অধিকার প্রতিষ্ঠা করা যায়নি। মূলত শ্রমিক সংগঠনগুলোর আদর্শিক বিরোধের কারণে অনেক সময় শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ঠ বিষয়ে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন সম্ভব হয়নি। যার ফলে মেহনতি শ্রমিকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আমরা শ্রমিক সংগঠন করি শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য। তাই শ্রমিকের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাহলে এই বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সমস্যা দূরীকরণ হবে।
তিনি গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত অন্যান্য শ্রমিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দের সম্মানে ইফতার মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর হোসাইন-এর সঞ্চালনায় এতে অংশগ্রহণ করেন বাংলাদেশ পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কবির আহমাদ, জাতীয় শ্রমিক ফোরামের সভাপতি এম জাহাঙ্গীর আলম, জাগো বাংলাদেশ গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি বাহরানে সুলতান বাহার, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক জোট বাংলাদেশের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন সহিদ, শ্রমিক মজলিসের সভাপতি মো: নুর হোসেন, জাতীয় গার্মেন্টস শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি মো: শফিকুল ইসলাম, জাতীয় শ্রমিক কর্মচারী জোটের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রব্বানী জামিল, বাংলাদেশ শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এ এম ফয়েজ হোসেন, বাংলাদেশ ট্রাস্ট গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি এইচ এম বিল্লাল, ন্যাশনাল ওয়াকার্স ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন, রিকশা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মহিব্বুল্লাহ, ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক নুরুল আমিনসহ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও জাতীয় ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ।
হারুনুর রশিদ খান বলেন, করোনা মহামারীতে শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কর্মহীন পড়েছে অসংখ্য শ্রমিক। এই দুর্দিনে দিনের পর দিন তাদেরকে পরিবার-পরিজন নিয়ে উপোষ থাকতে হয়েছে। এই সময়ে আমরা দেখেছি শ্রমিক সংগঠনগুলো শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। সরকার বিভিন্ন সেক্টরে প্রণোদনা দিলেও মালিকরা শ্রমিকদের বেতন-ভাতা দেইনি। এক্ষেত্রে সকল শ্রমিক সংগঠনের উচিত ছিল সরকার ও মালিকপক্ষের সাথে বসে শ্রমিকদের ন্যায়সঙ্গত অধিকার নিশ্চিত করা। কিন্তু তা করা সম্ভব হয়নি। মালিকরা চায় শ্রমিক সংগঠনগুলোর মধ্যে অনৈক্যের বিভেদ ছড়িয়ে দিতে। যেন অনৈক্যের সুযোগ নিয়ে তারা শ্রমিকদের অধিকারকে বঞ্চিত করতে পারে।
তিনি আরও বলেন, শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে সর্বপ্রথম শ্রমিক সংগঠন গুলোকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমাদের প্রতিটি সংগঠনের নীতি আদর্শ স্ব স্ব সংগঠনে চর্চা হবে। নীতি আদর্শ নিয়ে আমাদের মধ্যে মতভেদ থাকতে পারে। কিন্তু শ্রমিকের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদেরকে এক মঞ্চে এসে দাঁড়াতে হবে। সকল মতভেদ ভুলে হাতে হাত রেখে রাজপথে শ্রমিকের পক্ষে কন্ঠ সুউচ্চ করতে হবে। শ্রমিক ন্যায্য অধিকার আদায় না পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে।