বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, ট্রেড ইউনিয়ন হচ্ছে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি আদায়ের একমাত্র সংগঠন ও শক্তি। শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ ও সুসংগঠিত করাই হচ্ছে ট্রেড ইউনিয়নের কাজ। ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনের মাধ্যমে শ্রমিক শ্রেণীকে সংগঠিত ও সচেতন করে ন্যায্য অধিকার আদায়ের আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার পাশাপাশি সমাজ পরিবর্তনের আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।এজন্য ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। গতকাল ২০ নভেম্বর শুক্রবার বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে কৃষি, মৎস, চাতাল, দোকান-কর্মচারী, হকার্স, হোটেল, হাসপাতাল, নির্মাণ, ছাপাখানা, করাত কল,কাঠমিস্ত্রি, ইলেকট্রিশিয়ান, ইটভাটা, মাটিকাটা শ্রমিক সেক্টরের দায়িত্বশীল ও সংশ্লিষ্ট সেক্টরগুলোর ট্রেড ইউনিয়নসমূহের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকবৃন্দদের নিয়ে এক ভার্চুয়াল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ-ই কথা বলেন।
ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও বাংলাদেশ কৃষিজীবী শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম রাব্বানীর সভাপতিত্বে এবং ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ও বাংলাদেশ চাতাল শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় সভাপতি আজহারুল ইসলামের পরিচালনায় কর্মশালায় প্রধান আলোচক ছিলেন ফেডারেশনের অন্যতম উপদেষ্টা ও সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা মাওলানা এ এইচ এম আব্দুল হালিম।অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন দোকান কর্মচারী ও হকার্স শ্রমিক সেক্টরের সভাপতি শ্রমিক নেতা এস এম লুৎফর রহমান, নির্মাণ শ্রমিক সেক্টরের সভাপতি নুরুল আমিন প্রমুখ।
প্রধান অতিথি আরও বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনের নেতৃবৃন্দকে শ্রমিক শ্রেনীকে ঐক্যবদ্ধ করার পাশাপাশি নিজেদের নৈতিক মান উন্নত করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে। এজন্য সর্বদা আদর্শিক জ্ঞান অর্জন ও আখেরাতের জবাবদিহিতার অনূভুতি লালন করতে হবে। সঠিক কর্ম পরিকল্পনার মাধ্যমে সাধারণ শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে হবে।তাদের সুখে দুঃখের অংশীদার হতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নকে শ্রমিকদের সেবার কেন্দ্রবিন্দু হিসাবে গড়ে তুলতে হবে।আমাদের মনে রাখতে হবে শ্রমজীবী মেহনতী মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণের অপরিহার্য হাতিয়ার হিসাবে ট্রেড ইউনিয়নের কোন বিকল্প নেই।
প্রধান আলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, সেক্টর দায়িত্বশীলদের কে যোগ্যতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে শ্রমিক ময়দানে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নিজেদেরকে তৈরি করতে হবে। সাধারণ শ্রমজীবী মানুষদেরকে স্ব- স্ব পেশায় ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলনে সম্পৃক্ত করে অধিকার আদায়ের লড়াইয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে মাঠে নামাতে হবে। ট্রেড ইউনিয়নকে নির্যাতিত,নিপীড়িত শ্রমিকদের অভিভাবক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।ইসলামী শ্রমনীতির আন্দোলনের গনভিত্তি তৈরিতে সেবামূলক কার্যক্রমকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে নিয়ে যেতে হবে।
তিনি আরো বলেন আদর্শভিত্তিক শ্রমিক আন্দোলনকে গতিশীল করতে পেশা ভিত্তিক আন্দোলন জোরদার করতে হবে। স্ব স্ব ইউনিয়নকে শক্তিশালী ইউনিয়ন হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।নিজনিজ পেশায় শ্রম আইনে যে অধিকার দিয়েছে সে ব্যাপারে সচেতন হতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট সেক্টরের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করে তা সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট দাবী দাওয়া নির্ধারণ করে তা আদায়ের জন্য শ্রমিকদের সুসংগঠিত করে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে হবে।
উক্ত কর্মশালায় সারাদেশের তিন শতাধিকের উপর সেক্টর ও ট্রেড ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকগন উপস্থিত ছিলেন।