বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, ১৮৮৬ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরে হে মার্কেটের সামনে আট ঘণ্টা কাজের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর র্নিবিচারে গুলি ও হামলা চালিয়ে ইতিহাসের করুণ অধ্যায় রচনা করেছিল। সরকার আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর গুলি চালিয়ে শ্রমজীবী মানুষের দাবি-দাওয়া চিরতরে বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল। কিন্তু শ্রমিকরা আত্মত্যাগের মাধ্যমে সরকারের পরিকল্পনা নস্যাৎ করে দিয়েছিল। তাই আজকের শ্রমিক দিবস শুধু মাত্র একটি দিবসের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। এটি শ্রমজীবী মানুষের রক্তাক্ত ইতিহাসের দলিল। এই দিনকে যথাযথ মর্যাদা ও গুরুত্ব সহকারে পালন করতে হবে।
তিনি আজ বুধবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস উপলক্ষ্যে শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কর্তৃক গৃহীত ১০ দিনব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণাকালে এসব কথা বলেন। এসময় উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি লস্কর মুহাম্মদ তসলিম, কবির আহমাদ, মনসুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক নুরুল আমিন ও আইন আদালত সম্পাদক সোহেল রানা মিঠু প্রমুখ।
হারুনুর রশিদ খান বলেন, শ্রমজীবী মানুষরা যুগে যুগে নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হয়ে আসছে। বিভিন্ন সময়ে সরকার-মালিকপক্ষ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে শ্রমিকদের ওপর নির্মম নিপীড়ন চালিয়েছে। শ্রমিকরা যখন তাদের ন্যায্য দাবিতে কণ্ঠ সুউচ্চ করেছে তখন বিভিন্ন অজুহাতে তারা শ্রমিকের পেটে লাথি মেরেছে। শ্রমিকদের চাকুরিচ্যুত করে তাদের কণ্ঠ স্তব্দ করে দিতে চেয়েছে। আজকের এই সময় অতীতের থেকে ভিন্ন নয়। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে নির্যাতন-নিপীড়নের মাত্রা অতীতের সকল রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে। মেহনতি শ্রমিকের মুক্তির জন্য আমাদেরকে এই দিন থেকে প্রেরণা নিতে হবে। দলমত ভুলে গিয়ে শ্রমিকের স্বার্থের জন্য ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তাহলে শ্রমিক দিবসের কাক্সিক্ষত লক্ষ্য প্রতিষ্ঠিত হবে।
তিনি ২৮ এপ্রিল থেকে ৭ মে পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী নিম্মোক্ত কর্মসূচি পালনের জন্য সারাদেশের সকল জেলা-মহানগরী, জাতীয় ফেডারেশন, ক্রাফট ফেডারেশন ও ট্রেড ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
১. মহানগরী, জেলা, উপজেলা ও থানার উদ্যোগে আলোচনা সভা, র্যালি ও শ্রমিক সমাবেশ।
২. জাতীয় ইউনিয়ন, ক্রাফ্ট ফেডারেশন ও ট্রেড ইউনিয়নের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও র্যালি।
৩. সাধারণ শ্রমিকদের মাঝে খাদ্য ও ঈদ সামগ্রী বিতরণ।
৪. অস্বচ্ছল ও কর্ম-অক্ষম শ্রমিকদেরকে আর্থিক সহায়তা প্রদান।
৫. বেকার শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের জন্য সহায়তা প্রদান।
৬. শ্রমিক পরিবারের মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ।
৭. সুবিধা বঞ্চিত ছাত্র-ছাত্রীদের মাঝে ঈদ উপহার বিতরণ করা।
৮. শ্রমিক নেতৃবৃন্দের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও উপহার প্রদান করা।
৯. বিভিন্ন পেশার শ্রমিকদেরকে নিয়ে ঈদ পরবর্তী সামষ্টিক ভোজ।