আসন্ন মাহে রমজান ভাবগাম্ভীর্য ও যথাযথ মর্যাদার সাথে পালন করার জন্য দেশবাসীসহ সর্বস্তরের শ্রমজীবী মানুষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান ও সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান।
আজ এক যৌথ বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, রমজান মাস আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে ঈমানদারদের জন্য এক বিশেষ নেয়ামত। এ মাস বরকত ও কল্যাণের মাস। বরকত ও কল্যাণ পুরোপরি আদায় করার জন্য এই মাসের হক যথাযথ পালন করা একান্ত আবশ্যক। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের জন্য এই মাসের কোনো বিকল্প নেই। রমজান মাসে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের লক্ষ্যে আল্লাহকে বেশি বেশি ভয় করুন। সর্বদা আল্লাহর ওপর ভরসা রাখুন। নিজেদের ভুলত্রুটির জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করুন। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে কিয়ামুল লাইল ও লাইলাতুল ক্বদর গুরুত্ব সহকারে পালন করুন।
নেতৃবৃন্দ বলেন, রমজান মাসের গুরুত্ব বৃদ্ধি পাওয়ার কারণ হলো এই মাসে আল কুরআন অবতীর্ণ করা হয়েছে। আমরা দেশবাসীসহ শ্রমজীবী মানুষের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি, এই পবিত্র মাসে বেশি বেশি কুরআন অধ্যয়ন করুন এবং ইসলামী শ্রমনীতির প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে শামিল হোন। সুদ, ঘুস, মাদক, জুয়া ও অশ্লীলতা-বেহায়াপনাসহ হারাম ও সীমালঙ্ঘনমূলক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকুন। সকল ধরনের গুণাহ থেকে বিরত থাকুন। রমজান মাসকে প্রশিক্ষণের মাস হিসেবে গ্রহণ করুন। এই মাসে অর্জিত গুণাবলির মাধ্যমে বছরের বাকি সময় অতিবাহিত করার দীপ্ত শপথ গ্রহণ করুন।
নেতৃবৃন্দ সরকারসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এই পবিত্র মাসের পবিত্রতা রক্ষার জন্য গণমাধ্যম, ফেসবুক, ইউটিউবসহ সকল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অশ্লীল প্রদর্শনী বন্ধ করতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের দাম শ্রমজীবী মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। দিনমজুর ও নিম্ন আয়ের শ্রমজীবী মানুষের জন্য সরকারিভাবে প্রয়োজনীয় খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করতে হবে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারসাজিতে জড়িত অসাধু ব্যবসায়ী এবং খাদ্য সামগ্রীতে ভেজাল মিশ্রণকারীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। প্রাতিষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রের পাশাপাশি অপ্রাতিষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত শ্রমজীবী মানুষের কর্মঘণ্টা কমানোর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, আমরা আশা প্রকাশ করেছিলাম, সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে পবিত্র রমজান মাসের পূর্বে ফেডারেশনের প্রধান উপদেষ্টা ডা. শফিকুর রহমান, কেন্দ্রীয় সভাপতি আ ন ম শামসুল ইসলাম ও সাবেক সভাপতি মিয়া গোলাম পরওয়ারসহ সকল রাজবন্দিদের মুক্তি দিবে। দুঃখজনক হলেও সত্য সরকার এই বয়োবৃদ্ধ নেতৃবৃন্দকে মুক্তি তো দিচ্ছে না উল্টো আদালত যাদের জামিন দিচ্ছে তাদেরকে জেলগেটে পুনরায় গ্রেফতার করে স্পষ্টত্ব মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে। আমরা চাই এই পবিত্র মাসে সরকারের শুভবুদ্ধি উদয় ঘটবে এবং সরকার প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে শ্রমজীবী মানুষের প্রাণপ্রিয় নেতৃবৃন্দকে পবিত্র রমজান মাস নির্বিঘ্নে পালনের সুযোগ করে দিবে।
নেতৃবৃন্দ বিশ্ব নেতৃবৃন্দের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, এই পবিত্র রমজান মাসে মুসলমান অধ্যুষিত দেশ ও অঞ্চলে পশ্চিমাদের চাপিয়ে দেওয়া যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে। মুসলমানদের নির্বিঘ্নে রমজান মাস পালনের জন্য শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে জাতিসংঘ, ওয়াআইসিসহ বিশ্ব নেতৃবৃন্দকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে হবে। বিশেষ করে ফিলিস্তিন, সিরিয়া, কাশ্মীর, বসনিয়া, চেসনিয়া ও উইঘুর-রোহিঙ্গাদের চলা নির্যাতন নিপীড়ন অবিলম্বে স্থায়ীভাবে বন্ধ করতে হবে।