পবিত্র মাহে রমযানে করোনাভাইরাস সংক্রমন পরিস্থিতিতে শ্রমিক-কর্মচারীদের বকেয়া বেতন-ভাতা পরিশোধ বিশেষ করে গার্মেন্টস ও পরিবহন সহ সর্ব পর্যায়ের শ্রমিক এবং ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় ও কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্নআয়ের মানুষের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করে রমযানের পবিত্রতা রক্ষার্থে সকলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম।
গতকাল বুধবার রমযানকে স্বাগত জানিয়ে দেয়া বিবৃতিতে তিনি এই কথা বলেন, তিনি আরো বলেন, সমাজের একটি বিরাট অংশ শ্রমজীবী। যাদের উল্লেখ যোগ্য একটি অংশ শারীরিক শ্রমজীবী মানুষ। পবিত্র মাহে রমযান উপলক্ষে তাদের প্রতি বিশেষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত। সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী বিশেষ করে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস সংক্রমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত অসহায় ও কর্মহীন হয়ে পড়া নিম্নআয়ের মানুষের রমজানে রোজা পালনে কষ্টকর হবে, এমতাবস্থায় তিনি দেশের বিত্তবানদের এগিয়ে আসার আহবান জানান।
তিনি সমাজের বিত্তবানদের উদ্দেশ্য করে বলেন, অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো হলো মাহে রামযানের দাবি। মাসব্যাপী সিয়ামসাধনার দাবী হল দুখী মানুষের কল্যাণে এগিয়ে আসা, নিঃস্ব নিরন্ন মানুষের মুখে হাসি ফুটানোর জন্যে তাদের প্রতি সহযোগিতার হাত প্রসারিত করা। একারণেই অসহায় মানবতার শ্রেষ্ঠ বন্ধু রাসূল (স.) রামযান মাস কে পারস্পরিক সমবেদনা জ্ঞাপনের মাস বলে আখ্যায়িত করেছেন।তাই সিয়াম সাধনার মাধ্যমে রোজাদারের অন্তরে দানশীলতা ও বদান্যতার গুণাবলি সৃষ্টি হতে পারে। মানুষকে দানশীল, সহানুভূতিশীল, মানবদরদি ও পারস্পরিক কল্যাণকামী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ইসলামের প্রতিটি ইবাদত সম্মিলিতভাবে প্রচেষ্টা চালায়।তাই হাদিসে কুদসিতে বর্ণিত আছে, ‘আল্লাহ পাক বলেছেন: হে আদম সন্তান! তুমি দান করতে থাকো, আমিও তোমাকে দান করব।’ (বুখারি ও মুসলিম)
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের সওগাত নিয়ে মাহে রমযান আবার সমাগত। পবিত্র এ রমযান মাস কুরআন নাজিলের মাস। পবিত্র কুরআন মানবতার মুক্তির সনদ। রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, এ মাসের প্রথম অংশ রহমতের, মধ্যবর্তী অংশ মাগফিরাতের ও শেষ অংশ নাজাতের। এ মাসের শেষ দশ দিনের মধ্যে রয়েছে একটি বরকতময় রাত যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম। এ মাস সবর ও পরস্পরের প্রতি সহানুভূতিশীলতার মাস। এ মাসটি পূর্ণ মর্যাদাসহকারে পরিপূর্ণ আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও তাক্বওয়ার সাথে পালন করার জন্য তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি মালিক ও ব্যাবসায়ীদের উদ্দেশ্য করে বলেন,পবিত্র রমযান মাসে একদিকে মালিক পক্ষ শ্রমঘণ্টা কমিয়ে যেমন শ্রমিকদের কষ্ট লাঘব করা উচিত তেমনি শ্রমিক ভাইয়েরা যেন সহজেই পণ্যসামগ্রী ক্রয় করতে পারে সেজন্য ব্যবসায়ী ভাইদের খেয়াল করা উচিত, যেন অযথা পণ্যসামগ্রীর দাম না বাড়ে। জনাব শামসুল ইসলাম আরো বলেন, সবাই মিলে একসঙ্গে পবিত্র রমযান মাসের পবিত্রতা রক্ষার জন্য কাজ করতে হবে। নিজে অংশগ্রহণ করতে হবে এবং অন্যকে অংশগ্রহণ করার জন্য উদ্বুদ্ধ ও সহযোগিতা করতে হবে।
তিনি বলেন, রমযানের পবিত্রতা রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সবার। সব মুসলমানের ঈমানি দায়িত্ব হলো পবিত্র রমযান মাসের পবিত্রতা ও পরিশুদ্ধতা বজায় রাখা এবং অবাঞ্ছিতভাবে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে রোজাদারদের কষ্ট দেওয়ার মতো ন্যক্কারজনক কাজ থেকে দূরে থাকার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান।