বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান বলেছেন, যে দেশে প্রতি বছর ঈদের সময় বেতন ও উৎসব ভাতার দাবিতে শ্রমিকদের রাজপথে নেমে আসতে হয়। ন্যায্য পাওনা চাইতে গিয়ে শিল্প পুলিশের লাঠির মার খেতে হয়। কথায় কথায় চলে শ্রমিক ছাঁটাই। যে দেশের শ্রম আইন শ্রমিকদের সুরক্ষা দেওয়ার পরিবর্তে মালিকদের বেশি নিরাপত্তা দেয়। সে দেশের প্রচলিত শ্রম আইনে শ্রমিক সমস্যার সমাধান হবে না।
তিনি আজ গোয়াইনঘাট উপজেলা নির্মাণ শ্রমিক ইউনিয়ন (সিলেট-৫৭) এর উদ্যোগে ঈদ পুর্নমিলনী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ইউনিয়ন সভাপতি সাইফুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে ও নাজিম উদ্দীন মোহাম্মদ কাওসার-এর সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জয়নাল আরেবদীন, শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেনশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক মাওলানা সোহেল আহমদ, সিলেট জেলা উত্তরের সভাপতি নিজাম উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক জালালাবাদ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন, ফতেহপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিনহাজ উদ্দিন, ফেডারেশনের গোয়াইনঘাট উপজেলার প্রধান উপদেষ্টা মাস্টার আবুল হোসেন, স্থলবন্দরের বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল খালিক, জৈন্তাপুর উপজেলা সভাপতি গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ।
আতিকুর রহমান বলেন, একজন শ্রমিক হাড়ভাঙা পরিশ্রম করা সত্ত্বেও ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত। তাদের নামমাত্র মজুরি দেওয়া। সামান্য বেতন দিয়ে বাসা ভাড়া ও খাবার খরচ মিটাতে তাদের হিমশিম খেতে হয়। টাকার অভাবে শ্রমিকের সন্তানরা শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত। শ্রমিকের সন্তানরা বছরে দুই ঈদের সময় বাবা-মায়ের দিকে তাকিয়ে থাকে একটি নতুন পোশাকের জন্য। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্ত্বেও প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের খাতা কলমে হিসেব করে যে সামান্য উৎসব ভাতা ঘোষণা করা হয় সেই ন্যূনতম ভাতাটুকু দিতে মালিকপক্ষ চরম অনিহা প্রকাশ করে। অন্যদিকে দুই তৃতীয়াংশ শ্রমিক অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতে কর্মরত। তাদের জন্য কোন ধরনের উৎসব ভাতা বরাদ্দ থাকে না। ফলে এসব পরিবারে ঈদের আনন্দ আসে না।
তিনি আরও বলেন, ইসলাম শ্রমিকদের জন্য একটি সার্বজনিন আদর্শিক শ্রমনীতি উপহার দিয়েছে। আল্লাহর রসুল (সা.) বলেছেন, তুমি নিজের জন্য যা পছন্দ করো, তোমার অধীনস্ত শ্রমিকের জন্য তাই পছন্দ করো। তুমি যা খাও, শ্রমিককে তাই খেতে দাও। কিন্তু বাংলাদেশ শুধু সারা বিশ্বে এই অনুকরণীয় শ্রমনীতি দেখা যায় না। তাই আমরা শ্রমিক ভাইদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, আসুন কাক্সিক্ষত মুক্তির জন্য ইসলামী শ্রমনীতির পক্ষে নিজেদের সম্পৃক্ত করি। প্রচলিত শ্রমনীতির বদলে ইসলামী শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠার জন্য এই আন্দোলনকে আরও বেশি গতি নিয়ে শ্রমিকদের মাঝে ছড়িয়ে দিতে কার্যকর ভূমিকা পালন করি।
এছাড়াও নিম্মোক্ত শাখায় ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে:
লক্ষ্মীপুর: বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন লক্ষ্মীপুর জেলার রায়পুর উপজেলার উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী ও শ্রমিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা সভাপতি মাস্টার মহিউদ্দিন হারুন-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক-এর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক এডভোকে আতিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ফেডারেশনের জেলা সভাপতি মমিন উল্লাহ পাটওয়ারী, উপজেলার উপদেষ্টা আবদুল আউয়াল রাসেল প্রমুখ।
অন্যদিকে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার উত্তর হামছাদী ইউনিয়নের উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। ইউনিয়ন সভাপতি রফিকুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকে আতিকুর রহমান। বিশেষ অতিথি ফেডারেশনের জেলা সভাপতি মমিন উল্লাহ পাটওয়ারী, সদর উপজেলা সভাপতি ডা. শাসসুল হুদা।
পিরোজপুর: বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন পিরোজপুর জেলার মঠবাড়িয়া উপজেলার উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা সভাপতি তারিক মুনাওয়ার-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুতালিব মৃধা-এর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের জেলা সভাপতি অধ্যক্ষ মোহাম্মদ জহিরুল হক। বিশেষ অতিথি ফেডারেশনের উপজেলার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক শরীফ আব্দুল জলিল।
কক্সবাজার: বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা সভাপতি সরোয়ারুল ইসলাম-এর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আমান উল্লাহ-এর সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের জেলা সভাপতি শামসুল আলম বাহাদুর। বিশেষ অতিথি ফেডারেশনের জেলার সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইউ বাহাদুর।
মাদারীপুর: বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন মাদারীপুর জেলার রাজৈইর পৌরসভার উদ্যোগে ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। পৌরসভা সভাপতি শেখ মোশারফ হোসেন-এর সভাপতিত্বে এতে প্রধান অতিথি ছিলেন ফেডারেশনের জেলার প্রধান উপদেষ্টা মাওলানা আব্দুস সোবহান খান। বিশেষ অতিথি ফেডারেশনের জেলা সভাপতি খন্দকার দেলোয়ার হোসাইন।