বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম করোনাভাইরাস বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকা শ্রমঘন গার্মেন্টস শিল্পের ৫০ লাখ শ্রমিকের স্ব বেতনে ছুটি নিশ্চিত করে অবিলম্বে গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ ঘোষণা এবং গার্মেন্টস শ্রমিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আহবান জানিয়েছেন। গতকাল এক বিবৃতিতে তিনি এই আহবান জানান ।
তিনি বলেন, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ১০ জন মানুষ এক জায়গায় জমায়েত নিষিদ্ধ ঘোষণা করে, পাশাপাশি সরকারের নির্দেশে সভা সমাবেশ, জমায়েত, স্কুল, কলেজসহ সকল পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছে,সেখানে গার্মেন্টস শ্রমিকরা এক জায়গায় একই ফ্লোরে এক সাথে পাশাপাশি কাজ করে কিভাবে নিরাপদে থাকবে? এক্ষেত্রে পরিচ্ছন্ন থাকা বা ভিড় এড়িয়ে চলাও রীতিমতো অসাধ্য ব্যাপার।
তিনি বিশেষজ্ঞদের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, চীনের সরকারি এপিডেমিওলজিস্টের একটি দল গবেষণার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন যে, প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ভাইরাসটি কাঁচ, কাপড়, ধাতু, প্লাস্টিক ও কাগজের ওপর ২-৩ দিন পর্যন্ত টিকে থাকতে পারে।অথচ সেখানে শ্রমিকদের এগুলো নিয়েই কাজ করতে হয়।এমনকি শ্রমিকদের মাঝে কাগজের মাধ্যমেও ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর সেটা হলে, কী ভয়াবহ অবস্থা তৈরি হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়!
আবার কোন শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত কি না তা নিশ্চিত হতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই। যদি কেউ আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে তার মাধ্যমে কর্মরত অন্যান্য শ্রমিক ও যাতায়াতের সময় যানবাহনে থাকা অন্যান্য শ্রমিকরা সহজেই সংক্রমিত হতে পারে। সেক্ষেত্রে ভাইরাস সংক্রমনের মাত্রা আরও বেড়ে যাবে। ফলে অনিরাপদ হয়ে যাবে মালিক-শ্রমিক এবং তাদের মাধ্যমে তাদের পরিবার পরিজনের জীবন।
তিনি সরকার ও মালিকদের উদ্দেশ্য করে বলেন,শ্রমিকদের স্বাস্থ্য রক্ষায় কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব রয়েছে। আমাদের রয়েছে ব্যাপক শ্রমঘন শিল্প। তা করোনামুক্ত রাখতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নির্দেশিত জীবাণু ও ভাইরাসমুক্ত রাখার সব সরঞ্জাম শ্রমিকদের জন্য বিনামূল্য সরবরাহ করা এবং শ্রমিকদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা প্রয়োজন।
শহরের সবচেয়ে বেশি জনঘনত্বপূর্ণ এলাকা বস্তির মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ মানুষের জন্য দ্রুতই বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। গৃহহীন, উন্মুক্ত এলাকায় বসবাসকারী উন্মুক্ত শহরবাসীকে বিপর্যয় থেকে রক্ষার জন্য বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে উদাত্ত আহ্বান জানান।