বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের ভারপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খান বলেছেন, আধুনিক যুগে যারা শ্রমজীবী মানুষের সমস্যা সমাধানে তত্ত্ব ও নেতৃত্ব দিয়েছে তাদের সকল তত্ত্ব এক পর্যায়ে গিয়ে ব্যর্থতায় পরিণত হয়েছে। একমাত্র ইসলামী শ্রমনীতি শ্রমিকের সমস্যার কাঙ্ক্ষিত সমাধান দিতে পেরেছে। ইসলামী শ্রমনীতি ব্যতীত শ্রমজীবী মানুষের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা অসম্ভব।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশন কর্তৃক আয়োজিত দোকান কর্মচারী ও হকার্স সেক্টরের নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় কালে এসব কথা বলেন। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আতিকুর রহমান-এর সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তব্য রাখেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর হোসাইন, দোকান কর্মচারী ও হকার্স সেক্টরের সভাপতি এস এম লুৎফর রহমান, সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন, ঢাকা মহানগরী দোকান কর্মচারী শ্রমিক ইউনিয়নের নেতা খিজার আহমেদ, শ্রমিক নেতা আবু কাউসার, ফারুক মিয়াজী, নুরুল হুদা মিলন, মোঃ আলমগীর, কামরুজ্জামান খান ফয়সাল, দেলোয়ার হোসেন লস্কর, নজরুল ইসলাম প্রমুখ।
অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, আধুনিক তত্ত্ব শ্রমিক সমস্যার সমাধান দিতে ব্যর্থ হয়েছে। এই নিয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করতে পারবে না। শ্রমিকের সমস্যা সমাধান করতে হবে যিনি শ্রম সৃষ্টি করেছেন তার আইনের আলোকে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবীর ভারসাম্য করতে কাউকে শ্রমিক, কাউকে মালিক বানিয়েছেন। কিন্তু তাই বলে কারো প্রতি তিনি জুলুম করেননি। মালিককে সম্পদের মালিকানা দেওয়ার পাশাপাশি শ্রমিকের প্রতি তার দায়িত্ব কি হবে বলে দিয়েছেন। আবার শ্রমিক হিসেবে একজন শ্রমিকের কি দায়িত্ব তাও তিনি বলে দিয়েছেন। আজকের দুনিয়ায় শ্রমিক অসন্তোষের প্রধান কারণ আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মালিকদের যে দায়িত্ব দিয়েছেন মালিকরা সেই দায়িত্ব পালন না করার ফল। আল্লাহর দেওয়া বিধান অনুসারে পৃথিবীর সকল নবী ও রাসুল শ্রমজীবী মানুষের যথাযথ অধিকার প্রতিষ্ঠা করে দেখিয়েছেন ইসলাম ছাড়া শ্রমজীবী মানুষের মুক্তি অসম্ভব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের দেশে অন্যান্য সেক্টরের ন্যায় দোকান কর্মচারী ও হকার্সরা নানাভাবে নির্যাতিত। দেশে প্রায় ৬০ লাখ দোকান কর্মচারী রয়েছে। এই সকল শ্রমিকদের চাকুরির নিরাপত্তা নেই। তাদের কোন নিয়োগপত্র দেওয়া হয় না। কোন ইস্যু ছাড়া যখন তখন তাদের চাকরি থেকে ছাঁটাই করা হয়। উৎসবভাতা দেওয়ার কথা থাকলেও বিক্রি কম হয়েছে এই অজুহাতে উৎসব ভাতা দেওয়া হয় না। ৮ ঘণ্টার অধিক সময় কাজ করতে বাধ্য করা হয়। অন্যদিকে হকার্সদের পদে পদে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। পুলিশ ও রাজনৈতিক নেতারা প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ চাঁদা হকার্সদের থেকে জোর করে আদায় করে। চাঁদা দিতে না পারলে তাদের ব্যবসা করতে দেওয়া হয় না। ফলে তাদেরকে চরম দুঃখ-কষ্টে জীবন অতিবাহিত করতে হচ্ছে।
অধ্যাপক হারুনুর রশিদ বলেন, ইসলাম কোন অন্যায় ও অনধিকার চর্চা সমর্থন করে না। ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়িত হলে শ্রমিকদের এই সকল সমস্যা আর থাকবে না। তাই শ্রমিকদের বৃহত্তর স্বার্থে ইসলামী শ্রমনীতি বাস্তবায়নের এই আন্দোলনকে আমাদের আরও বেগবান করতে হবে।