বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি সাবেক এমপি আ ন ম শামসুল ইসলাম বলেছেন, শ্রমজীবী মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ গঠনে শ্রমজীবী মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ শক্তিই সমাজ পরিবর্তন, সমাজের অন্যায় ও অবিচার দূরীকরণ, অধিকার আদায় এবং সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।আর শ্রমিকদের ঐক্যবদ্ধ করার ক্ষেত্রে ট্রেড ইউনিয়নের ভূমিকা অনস্বীকার্য।এছাড়া ইনসাফ ভিত্তিক শ্রমনীতি প্রতিষ্ঠা ও যোগ্যতা সম্পন্ন সামাজিক নেতৃত্ব গড়ে তুলতে নৈতিক মানসম্পন্ন ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃত্বের কোন বিকল্প নেই।
গতকাল বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে বাছাইকৃত ট্রেড ইউনিয়ন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের নিয়ে অায়োজিত এক ভার্চুয়াল কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথা বলেন।
ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি অধ্যাপক হারুনুর রশিদ খানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক আতিকুর রহমানের পরিচালনায় কর্মশালায় অন্যান্য নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ- সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, ড. সরোয়ার উদ্দিন সিদ্দিকী, ট্রেড ইউনিয়ন সম্পাদক এডভোকেট আলমগীর হোসাইন, প্রচার সম্পাদক আজহারুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিব্বুল্লাহ, দফতর সম্পাদক আবুল হাশেম, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ বাছির প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরো বলেন,আমাদের দেশের বেশির ভাগ শ্রমিকরাই শ্রম আইন সম্পর্কে তেমন একটা জানেন না। শ্রমিক হিসেবে অন্য সবার মতো তারও আইনের আশ্রয় নেয়ার অধিকার রয়েছে এটা না জানার কারণে অনেক শ্রমিক আইনি সুবিধালাভ থেকে বঞ্চিত হয়। বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ২১৩ ধারায় বলা হয়েছে যে কোন শ্রমিক তার আইনি অধিকার প্রয়োগের জন্য শ্রম আদালতে দরখাস্ত কিংবা মামলা করে তার অধিকার আদায় করতে পারেন।কিন্তু শ্রমিকরা তাদের অধিকার সম্পর্কে না জানার ফলে অন্যায় ভাবে চাকুরীচ্যুত করা হলে কিংবা ন্যায্য মজুরি ও গ্যাচুয়িটি না পেলে সঠিক প্রতিকার লাভ করতে পারেনা। তাই ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দকে শ্রম আইন সম্পর্কে জানতে হবে এবং শ্রম আইনে শ্রমিকদের যে মৌলিক অধিকার দিয়েছে সে সম্পর্কে তাদের প্রয়োজনীয় ধারণা দেয়ার উদ্যোগ নিতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ট্রেড ইউনিয়ন নেতৃবৃন্দদেরকে অবশ্যই সামাজিক উন্নয়নে কাজ করতে হবে। ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠনের সাথে সম্পৃক্ত প্রতিটি সদস্যকে সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে হবে। ইসলামী শ্রমনীতির আন্দোলনকে সফল করতে হলে শ্রমজীবি মানুষের ব্যাপক সমর্থন আদায় এবং আদর্শিক মানসম্পন্ন নেতৃত্ব গঠন করতে হবে। ইউনিয়নের সদস্যদের আত্ম উন্নয়ন, নৈতিক ও ধর্মীয় উন্নয়নে নেতৃবৃন্দকে মূখ্য ভূমিকা রাখতে হবে। শ্রমিকদেরকে হালাল হারাম, তাদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে জ্ঞান প্রদান করতে হবে। শ্রমিকদেরকে আদর্শিক মানে উন্নীত করণ ও অধিকার সম্পর্কে সচেতন ও সজাগ করে তুলতে পারলে কর্মশালার উদ্দেশ্য বাস্তবায়ন হবে ইনশাআল্লাহ।
উক্ত কর্মশালায় ফেডারেশনের অ্যাপিলিয়েটেড ট্রেড ইউনিয়ন সমূহের বাছাইকৃত দুই শতাধিক নেতৃবৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।